অনবরত হাঁচি ? জেনে নিন ঘরোয়া সমাধান

1630

হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া- এমনটা হলে বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন, এ আর এমন কী! হাঁচি একটি এলার্জিজনিত রোগ, কারো কারো ক্ষেত্রে সামান্যতম সমস্যা হলেও কারো কারো ক্ষেত্রে হাঁচির কারণেই দুর্বিষহ জীবন। হাঁচির সঙ্গে সম্পৃক্ত রোগ হলো অ্যালার্জিক রাইনাইটিস ও অ্যাজমা।

ঠান্ডা লেগে হোক, অ্যালার্জি থেকে হোক বা কোনো গন্ধের কারণে, হাঁচি খুব সাধারণ একটা বিষয়। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, একবার হাঁচি শুরু হলে আর থামতেই চায় না। যেকোনো পরিস্থিতিতেই অনবরত হাঁচি দিতে থাকা সুখকর নয় নিশ্চয়ই।

জেনে নিন এমন সমস্যার ঘরোয়া সমাধান-

যদি আপনার হাঁচি শুরু হয়ে আর থামতে না চায় তাহলে বুঝতে হবে শরীরে জিংকের সরবরাহ ঠিকঠাকভাবে হচ্ছে না। চিকিৎসকেরা জানান, হাঁচি যাদের এক নাগাড়ে চলতে থাকে, তাদের শরীরে জিংক-এর ঘাটতি রয়েছে। এক্ষেত্রে জিংক সাপ্লিমেন্ট খেলে সমস্যা মিটবে। বাদাম বা বিভিন্ন বীজ খেতে পারেন। এসবে প্রচুর জিংক থাকে।

আমলকি খান নিয়মিতভাবে। কাঁচা আমলকি সারা বছর পাওয়া যায় না তাই শুকনো আমলকি ভিজিয়ে তার রস খেতে পারেন। আমলকি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সর্দি-কাশির প্রবণতা কমায়। দিনে তিনবার আমলকির রস খান। উপকার মিলবে।

সকালে উঠে খালি পেটে আদাপানি খাওয়ার অভ্যাস থাকে অনেকের। এটি বেশ ভালো। তবে সেই আদার সঙ্গে তুলসি পাতার রস মিলিয়ে খেলেও এক্ষেত্রে বেশ উপকার পাবেন। সকালে উঠে ৩-৪টি তুলসি পাতা ও এক টুকরো ছোট আদা এককাপ পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানিটুকু খেতে নিন। অনবরত হাঁচি থেকে মুক্তি মিলবে।

রসুন আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী তা আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। রসুনকে বলা হয় প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক। হাঁচির সমস্যা থাকলে উপকার পাবেন রসুনে। অ্যালার্জির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য রসুনের জবাব নেই। ঘিয়ের সঙ্গে রসুন হালকা ভেজে গরম ভাতে মেখে খান, উপকার পাবেন।

আদা পানি কি সত্যিই উপকারী?

আদা-জল খেয়ে লেগেছে- এমন কথা শুনেছেন নিশ্চয়ই। কিন্তু সত্যিই কি এই আদা পানির উপকারিতা আছে? নাকি এটি শুধুই কথার কথা? আপনার মনেও যদি এই প্রশ্নটি এসে থাকে তবে তার উত্তর হলো, হ্যাঁ, অবশ্যই আছে।

বহু যুগ ধরে বদহজম ঠেকাতে, খাবারকে সহজপাচ্য করে তোলার কাজে বা ঠান্ডা লাগার মোক্ষম দাওয়াই হিসেবে আদার ব্যবহার হচ্ছে। ভারতীয় উপমহাদেশ বা চিনদেশের প্রাচীন সভ্যতায় আদার নানা অনুপানের ভুরি ভুরি উদাহরণ ছড়িয়ে আছে। জেনে নিন আদাপানির কিছু অসাধারণ উপকারিতা-

মর্নিং সিকনেস বা সি সিকনেসের মতো সমস্যা থেকে বাঁচতে চাইলে আদা আপনার সহায় হতে পারে। যে কোনও ধরনের বমিভাব ঠেকাতে এক টুকরো নুন-লেবুমাখা আদার টুকরো মুখে পুরে রাখুন।

অনেক সময় অতিরিক্ত ব্যায়াম বা পরিশ্রমের ফলে মাসলে ব্যথা হয়। সেক্ষেত্রে জলে আদা ফুটিয়ে ছেঁকে খান। টানা বেশ কয়েকদিন খাওয়ার পর ব্যথা নিশ্চিতভাবেই আগের চেয়ে কমে যাবে।

আদা পানি রক্ত পরিষ্কার রাখে। যার ফলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়ে। ব্রণ এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যাও দূর করে এই পানি।

আদা ডায়াবেটিস রোগের পক্ষে খুবই উপকারী। নিয়মিত আদা পানি খেলে ব্লাড-সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই পানি রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে৷ পাশাপাশি পেশির ব্যথারও উপশম করে। মাথাব্যথাও কমায়।

আদা পানি শরীরের মেটাবলিজম ঠিক রাখে। অতিরিক্ত ফ্যাট ঝরাতেও এর জুড়ি মেলা ভার। প্রদাহজনিত কোনো ব্যথা থাকলে সেটাও সারাতে পারে আদা পানি।

যারা দীর্ঘদিন ধরে বদহজমে ভুগছেন, তারা ডায়েটে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি নিয়মিত আদা পানি খান একটু লেবু মিশিয়ে। হজমশক্তি উন্নত হতে বাধ্য।

গলা ব্যথা, খুশখুশে কাশি বা ঠান্ডা লাগার সমস্যা থাকলে তো অবশ্যই আদা-মধু-লেবুর জল খান। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে চা না খেয়ে যদি আদা জলে ফুটিয়ে নিয়ে মধু মিশিয়ে খান। ফারাকটা কিছুদিনের মধ্যেই আপনার কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে।