পটলের স্বাস্থ্য উপকারিতা- জনপ্রিয় সবজির মধ্যে পটল অন্যতম ও জনপ্রিয় একটি সবজি। পটলের ইংরেজী নাম Multitude এই পটলের রয়েছে বিভিন্ন ব্যবহার।
পটল দিয়ে নানা রকমের খাবার করা হয়, পটল কিছুটা শসা ও ক্ষীরা গোত্রের উদ্ভিদ। পটল স্যুপ, তরকারী, ভাজা এমনকী মিষ্টান্ন প্রস্তুতিতেও ব্যবহৃত হয়। ভর্তা, ভাজি, মাছ এবং সেই সঙ্গে বিভিন্ন সবজির সঙ্গেও রান্না করে খাওয়া হয় পটল।
ইলিশ-পটলের ঝোল জনপ্রিয় একটি রেসিপি। সারা বছরই বাজারে পাওয়া যায় পটল। ছোট এই সবজিটি দেখতেও খুব সুন্দর। নেপালে অসুস্থ্য রোগীদের পটলের স্যুপ খাওয়ানো হয়।
দক্ষিণ এশিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে আলুর সঙ্গে রান্না করা হয়। ইন্দোনেশিয়ায় পটল বৈচিত্রময় রান্নায় ব্যবহার করা হয় যেমন- স্টার ফ্রাই, নারিকেল দুধে অথবা ভাপে সিদ্ধ করে রান্না করা হয়। এটি এশিয়া ছাড়াও অস্ট্রেলিয়াতে পাওয়া যায়।
পটল একটি পুষ্টিকর খাদ্য। এতে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১, ভিটামিন বি ২ ও ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।
পটল সবজি হিসেবেই আমরা খেয়ে থাকি কিন্তু এই পটল ও এর বিচিতে রয়েছে অগণিত স্বাস্থ্য উপকারিতা। যা অনেকেই জানেন না। পটল হজমশক্তি বাড়ায়। কাশি, জ্বর, র”ক্তস্বল্পতা কমায়। কৃমি সাড়ায় এবং শরীর ঠান্ডা রাখে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
পটলের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আসুন জেনে নিন
হজমে সাহায্য করে-
সবুজ রঙের এই সবজিটিতে ভালো পরিমাণে ফাইবার থাকে যা খাদ্য হজমে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা সমাধানে এবং লিভারের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানেও সাহায্য করে। পটলের সঙ্গে ধনে পাতা হালকা ছেঁচে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। মি’শ্রণটি তিন বারে পান করুন। হজম শক্তিতে বেশ উপকার পাবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে-
পটলের বিচিও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। যা কোষ্ঠ’কাঠিন্য নিরাময়ে এবং মল নির্গমনে সাহায্য করে।
ওজন কমতে সাহায্য করে-
পটলে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। তাই ওজন কমানোর জন্য নিশ্চিন্তে পটলের তরকারি খেতে পারেন। এটি পেট ভরা রাখতে ও ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। পটলের বিচিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় র”ক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিক থাকে ও চিনির পরিমাণ স্বাভাবিক থাকে। ফলে হৃদরোগ ও ডায়বেটিসের ঝুঁ’কি থাকে না। তাই নিয়মিত বেশি করে পটল খান।
রক্ত পরিষ্কার করে-
নিয়মিত পটল খেলে র”ক্ত পরিষ্কার থাকে। ফলে ত্বক ভাল থাকে। এর ফলে ত্বকের যত্নেও এই সবুজ সবজিটি ভালো কাজ করে।
কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগার কমায়-
পটলের ছোট গোলাকার বিচি গুলো কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগারের মাত্রা প্রাকৃতিকভাবে কমাতে সাহায্য করে।
ফ্লু নিরাময়ে সাহায্য করে-
আয়ুর্বেদী চিকিৎসায় ঠাণ্ডা, জ্বর ও গলা ব্যথা কমতে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় পটল।
বয়সের ছাপ দূর করে-
পটলে ভিটামিন এ ও সি থাকে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে বলে ত্বকের জন্য উপকারী। ফ্রি র্যাডিকেলের বিস্তার রোধ করে বয়সের ছাপ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে পটল।
মাথাব্যাথা কমায়-
সবুজ পটলের রস মাথায় লাগালে মাথাব্যাথা দূর হবে এবং যাদের অল্প বয়সে টাকের সমস্যা রয়েছে তাদের টাক সমস্যাও দূর হবে।
কামরাঙা খেলে যে উপকার মিলবে….
বিশেষজ্ঞদের মতে ম্যাজিক ফল কামরাঙা। বেশি টক হওয়ার কারণে অনেকেই কামরাঙা খেতে না পারলেও কামরাঙার চাটনি বা আচার প্রায় সবাই ভালবাসেন৷ ভেজাল, দূষণ, অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপনের কারণে শরীরের দফারফা হয়ে যাচ্ছে? ঠিক এই পরিস্থিতিতে মুশকিল আসান হতে পারে একটি ফল।
চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, ভিটামিন বি-৯ অর্থাত্ ফলিক অ্যাসিডে ভরপুর কামরাঙা। যা হার্টের সমস্যার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। এ ছাড়া কামরাঙায় আয়রনের পরিমাণ পাকা কাঁঠাল, কমলালেবু, পাকা পেঁপে, লিচু, ডাবের পানির চেয়েও বেশি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, কোলেস্টেরল কম করা এবং হাইপারটেনশন দূর করতে কামরাঙার জুড়ি মেলা ভার। শুধু কামরাঙা ফলই নয়, কামরাঙা গাছের পাতাও খুবই উপকারি।
কামরাঙায় রয়েছে এলাজিক অ্যাসিড, যা খাদ্যনালির ক্যানসার প্রতিরোধ করে। এর পাতা ও কচি ফলের রসে রয়েছে ট্যানিন, যা র”ক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। সর্দিকাশিতে দারুণ উপকারি।
কামরাঙার কার্যকারিতা ও ব্যবহারের উপায় সম্বন্ধে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, এক নজরে চোখ বুলিয়ে নিন।
ব্রণ দূর করে- কামরাঙা ব্রণ দূর করতে বেশ কার্যকর। সমান পরিমাণ কামরাঙার রসের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এবার একটি তুলার বলে এই মিশ্রণ লাগিয়ে ব্রণের ওপর লাগান। ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন, ধীরে ধীরে ব্রণ দূর হয়ে যাবে।
চোখের নিচের ফোলাভাব দূর করে- কামরাঙার স্লাইস চোখের নিচে লাগিয়ে ১০ মিনিট চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকুন। এবার পানি দিয়ে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটি আপনার চোখের চারপাশের ফোলাভাব দূর করবে এবং টানটান রাখবে।
ত্বক পরিষ্কার করে- নিয়মিত বাসায় ফিরে কামরাঙার রস ত্বকে লাগিয়ে ৫ মিনিট ম্যাসাজ করে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই রস আপনার ত্বকের ময়লা জীবাণু সহজেই পরিষ্কার করে ত্বক সতেজ করতে সাহায্য করবে।
বয়সের ছাপ দূর করবে- যেকোনো প্রাকৃতিক উপাদানের সঙ্গে কামরাঙার রস মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মুখে লাগান। এটি আপনার ত্বকের বলিরেখা দূর করবে এবং ত্বক টানটান করবে। এর ফলে চেহারার বয়সের ছাপ দূর হবে।
অন্যান্য ব্যবহারসমূহ- কাপড়ে লোহার দাগ লাগলে, কামরাঙা ফল কেটে টুকরো করে দাগের উপর ঘষতে হবে, দাগ উঠে যাবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। কামরাঙা চুল, ত্বক, নখ ও দাঁত উজ্জ্বল করে। মুখে ব্রন হওয়া আটকাতেও সাহায্য করে এই ফল। তাই সাধারণ ফল হলেও একটি ফলেই হতে পারে মুশকিল আসান, ধন্যবাদ।