পুুষ্টিগুনে ভরা লাউয়ের বেশ কিছু উপকার জেনে নিন

1698

লাউয়ের যত পুুষ্টিগুন- আমাদের দেশে লাউ একটি জনপ্রিয় সবজি। লাউ সাধারণত শীতকালীন সবজি হলেও এখন সারা বছরই পাওয়া যায়।

লাউয়ের পাতা ও ডগা শাক হিসেবে এবং লাউ তরকারি ও ভাজি হিসেবে খাওয়া যায়। লাউয়ের চেয়ে এর শাক বেশি পুষ্টিকর।

লাউ একই সঙ্গে সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর একটি সবজি। আর এর উপকারিতাও অনেক প্রতি ১০০ গ্রাম লাউয়ে আছে, কার্বোহাইড্রেট- ২.৫ গ্রাম, প্রোটিন- ০.২ গ্রাম, ফ্যাট- ০.৬ গ্রাম, ভিটামিন-সি- ৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ২০ মি.গ্রা., ফসফরাস- ১০ মি.গ্রা.,পটাশিয়াম- ৮৭ মি.গ্রা., নিকোটিনিক অ্যাসিড- ০.২ মি.গ্রা.। এছাড়াও লাউয়ে রয়েছে খনিজ লবণ, ভিটামিন বি-১, বি-২, আয়রন।

উপকারিতা:

ওজন কমাতে:

ওজন বেড়ে যাওয়া বর্তমান সময়ের মা’রা’ত্ম’ক একটি স্বাস্থ্য-সমস্যা হয়ে উঠেছে। বাড়তি ওজনের হাত ধরে পরবর্তীতে এসে হাজির হয় উচ্চ র’ক্তচা’প, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের মতো জীবন-ঘা’তী অসুখ। ৯২ শতাংশ পানি থাকায় অল্প ক্যালরির এ সবজিটি আপনার নিয়মিত খাদ্য’তালিকায় থেকে আপনাকে বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে:

লাউ র’ক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে। এই “হাইপোগ্লাইসেমিক প্রোপার্টির” কারণে ডায়াবেটিক রোগীর খাদ্যতালিকার নিয়মিত একটি পথ্য লাউ।

র’ক্তচা’প নিয়ন্ত্রণে:

লাউ র’ক্তে’র চাপ কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে। কাজেই উচ্চ র’ক্ত’চাপের বিপরীতে এটি হতে পারে প্রাকৃতিক সুরক্ষা।

হৃদরোগের ঝুঁ’কি কমাতে:

গবেষণায় দেখা গেছে,বেশ কিছুদিন নিয়মিত লাউ এর জুস পান র’ক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। একইসাথে র’ক্তচা’প নিয়ন্ত্রণ এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট গুণের জন্য লাউ হৃদরোগের ঝুঁ’কি কমাতে সাহায্য করে।

লিভার সুরক্ষায়: লাউ এর জিংক লিভার বা যকৃতকে প্রদাহজনিত রোগ (ইনফ্লামেটরি ডিজিস) থেকে সুরক্ষিত রাখে।


মূত্রনালির সংক্রমণ, কিডনি ফেইলিউর এর বিরুদ্ধে:

লাউয়ে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকায় এটি কিডনি বা বৃক্কের মূত্র পরিস্রাবণ প্রক্রিয়া সচল রাখে। ফলে মূত্রনালির সংক্রমণ এবং তা থেকে পরবর্তীতে কিডনি ফেইলিউর হবার সম্ভাবনা কমে যায়।

ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে চোখে পরার মতো:

লাউয়ে উপস্থিত বিশেষ কিছু উপাদান শরীরে প্রবেশ করে এমন খেল দেখায় যে ত্বক ভিতর থেকে স্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে। ফলে সৌন্দর্য তো বাড়েই। সেই সঙ্গে তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এই কারণেই তো প্রতিদিন লাউয়ের রস বা এই সবজিটি দিয়ে তৈরি কোনও না কোনও পদ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, লাউ খাওয়া শুরু করলে আরও বেশ কিছু উপকার মেলে। যেমন ধরুন মাত্রতিরিক্ত ঘাম হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। সেই সঙ্গে ব্রণের মতো ত্বকের রোগে আ’ক্রা’ন্ত হওয়ার আ’শ’ঙ্কাও আর থাকে না।

শরীর ঠাণ্ডা করে:

অনেক সময়ই শরীরের ভিতরের তাপমাত্রা বেশ বেড়ে যায়, যা একেবারেই ভাল নয়। তাই তো সপ্তাহে ২-৩ দিন নিয়মিত লাউয়ের রস খাওয়া উচিত! আসলে এই সবজিটিতে যেমন রয়েছে প্রচুর মাত্রায় পানি, তেমনি রয়েছে প্রচুর পরিমাণ খনিজও, যা শরীরকে ঠাণ্ডা রাখার পাশাপাশি দেহের ভিতরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদেরও বার করে দেয়। ফলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। তেমনি দেহের ভিতরে তাপমাত্রা বা প্রাদাহ বাড়ার সম্ভাবনাও আর থাকে না।

ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশনের মতো রোগের প্রকোপ কমে:

বছরের এই সময়ে পরিবেশে নানাবিধ ক্ষতিকর জীবাণুর মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সংক্রমণের মতো রোগের প্রকোপ খুব বৃদ্ধি পায়।

বিশেষত মেয়েদের মধ্যে ইউরিনারি ট্রাক্ট ইফেকশনে আ’ক্রা’ন্ত হওয়ার আশঙ্কা বহু গুণে বেড়ে যায়। তাই তো শীতের শুরুতে নিয়মিত লাইয়ের রস খাওয়া মাস্ট! কারণ যে কোনও ধরনের সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে লাউয়ের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, এই সবজিতে প্রচুর মাত্রায় পানি থাকার কারণে এটি খেলে প্রস্রাব খুব ভাল হয়, ফলে ‘ইউ টি আই’ এর মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা এমনিতেই অনেকটা কমে যায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:

বেশ কিছু পরিক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিদিন লাউয়ের রসের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে সংক্রমণের পাশপাশি ছোট-বড় নানাবিধ রোগে আ’ক্রা’ন্ত হওয়ার আ’শঙ্কা যায় কমে। এবার নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন, আবহাওয়া পরিবরতনের সময় লাউয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর প্রয়োজন কতটা…