বাসায়-হোটেলে একান্তে সময় কাটানোর ব্যবস্থা করেন তিনি

3136

তরুণীর চুলে হলুদ গাঁদা। কপালে হলুদ টিপ। পরনের শাড়িটি সাদা, হলুদ। রয়েছে হালকা লালের ছোঁয়াও। হালকা হলুদ রঙের পাঞ্জাবি পরনের তার সঙ্গী ছেলেটির।

মিরপুরের সেনপাড়ার একটি গলিতে সিএনজি অটোরিকশাটি থামলো। সেখানে আগে থেকেই দাঁড়ানো ছিলেন এক নারী। নারী জানতে চান, মঞ্জু পাঠাইছে তো? যুবক মৃদু হেসে মাথা নাড়েন।

তারপর আসেন আসেন বলে নিয়ে যান পাশের বাড়ির গেট দিয়ে ভেতরে। এভাবেই ‘মঞ্জু ভাই’র মাধ্যমে সহজেই নিজের সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাচ্ছেন এই তরুণ-তরুণীরা।

‘মঞ্জু ভাই’ ব্যস্ত। আজ ব্যবসা খুব ভালো। ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। নম্বরটি ব্যস্ত আছে। মঞ্জু হোটেল ও বাসা ভাড়া দেন। ঘণ্টা হিসেবে। হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে বাসায়-হোটেলে রুম খালি নেই।

শ্যামলী ও গাবতলী এলাকায় কয়েকটি হোটেল রয়েছে। বাসা রয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। বিভিন্ন ধরনের বাসা। সুবিধা অনুসারে ভাড়া।

ঘণ্টা হিসেবে এক হাজার টাকা থেকে শুরু। তবে বিশেষ দিনে ভাড়া বেশি। পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সী এই ব্যক্তিকে পরিচিতরা ‘মঞ্জু ভাই’ নামে চিনেন। কিন্তু তার প্রকৃত নাম মঞ্জু না। এটি ছদ্মনাম।

টাকার বিনিময়ে নারী-পুরুষকে অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর ব্যবস্থা করে দেন তিনি। তার ভাষায় ‘মানুষ এটা ভালোভাবে দেখে না। তাই নকল নাম ব্যবহার করি।’

ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে গত কয়েকদিন আগে থেকেই রুম বুকিং চলছিলো। ভাড়া বেড়েছে দ্বিগুণ। বেশির ভাগ তরুণ-তরুণী রুম ভাড়া করেছেন বিকাল থেকে। কেউ কেউ রাতে।

কুমিল্লার মুরাদনগরের মঞ্জু জানান, কেউ কেউ ভুল করে গত শনিবারই রুম ভাড়া নিয়েছেন। ভুল করে বলতে, শনিবারই অনেকে পয়লা ফাল্গুন মনে করেছেন।

এবার একটু ভিন্নতা আছে তার আয়োজনে প্রত্যেক জুটিকে দুটি করে গোলাপ ফুল দিচ্ছেন তিনি। মঞ্জু কাজ করেন ফোনে। লোকেশন বলে দেন। তার লোকজন বাসায় বা হোটেলে নিয়ে যায়।

কখনও কখনও তিনি নিজেও যান। গ্রাহকদের নিরাপত্তা দেন বলেই তার প্রতি আস্থা বাড়ছে। মঞ্জু জানান, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের রুম ভাড়া দেন না।

প্রাপ্ত বয়স্করা টাকার বিনিময়ে তার সেবা পান। মঞ্জু দাবি করেন, তার পরিচিতি অনেক। ফার্মগেট, মহাখালীর হোটেলগুলো একসময় তিনিই চালাতেন।

পুলিশের কড়াকাড়ির কারণে এখন অবাধে হোটেলে ওঠা যাচ্ছে না। তারপরও কিছু হোটেল রয়েছে যেখানে মঞ্জু গেস্ট পাঠান। মঞ্জুর ভিজিটিং কার্ড বিতরণ হয় পুরো ঢাকাজুড়ে।

বিশেষ করে বাসস্ট্যান্ডে, কাওরানবাজারে প্রায়ই বিতরণ করা হয় তার কার্ড। এসব কার্ড অনেকে সেবা নেন তার। তবে তার দাবি, পরিচিত গেস্ট অনেক। ভ্যালেন্টাইন ডেতে পরিচিতরাই তার সেবা নিচ্ছে বেশি। সূত্র: মানবজমিন।