যে কারণে বেহেস্তের চেয়ে দোজখের- যে ব্যক্তি কিয়ামত দিবসে মহান আল্লাহ তায়ালার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং গুনাহের কাজ থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে তার ঠিকানা হবে জান্নাত।
যেদিন আল্লাহর আরশের ছায়া ব্যতিত আর কোনো ছায়া থাকবে না। সেদিন যারা আল্লাহর আরশের ছায়া পাবে তাদের মধ্যে একজন হচ্ছে, যে নির্জনে আল্লাহকে স্বরণ করে এবং তার দু’চোখ অশ্রুতে ভিজে যায়। যখন আপনার নফস গুনাহ করতে চায় তখন অন্তরকে আল্লাহর দৃষ্টির কথা স্বরণ করিয়ে দিন।
যদি কখনো একা থাকেন আর অন্তর বা নফস আপনাকে গুনাহের দিকে আহ্বান করে তখন অন্তরকে বলুন- মহান আল্লাহ সবই দেখছেন। আল্লাহ আমাকে দেখছেন। যদি আপনি মনে করেন যে, আল্লাহ আপনাকে দেখছেন না। তাহলে আপনি অনেক বড় কুফুরিতে লিপ্ত। অতিসত্তর তওবা করুন।
আবার যদি আল্লাহ আমার সব কর্মকান্ড দেখছেন এ বিশ্বাস নিয়েও যদি আপনি গুনাহে লিপ্ত হন সেটা হবে আপনার চরম অবাধ্যতা। চরম হঠকারিতা। চরম নির্লজ্জতা।
একবার ভাবুন তো, কাল কিয়ামত দিবসের কঠিন মুহুর্তে আপনাকে যখন আল্লাহর সামনে হাজির করা হবে তখন আপনি এর কী জবাব দেবেন?
মহান আল্লাহ তো আমাদের দোজখে দিতে চান না। যদি চাইতেন তাহলে দোজখের সংখ্যা হতো বেশি। কিন্তু না মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে অধিক পরিমানে ভালোবাসেন এবং ক্ষমা করেন বলেই বেহেস্তের চেয়ে দোজখের সংখ্যা কম!
রবের এ মহৎ ভালোবাসার কথা স্মরণ করে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করুন, কেন আমরা নিজেদের এভাবে ঠকাচ্ছি? কেন আমরা অকল্পণীয় বিপদকে আহ্বান করছি প্রতিনিয়ত? মাত্র দু’দিনের দুনিয়ায় লাগামহীন চলাফেরা এবং মহান রবের অবাধ্য হয়ে কেন পরকালের অনন্ত জীবনকে তুচ্ছজ্ঞান করছি। এটাতো কোনো বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না।
সেই কঠিনতম দিনটিতে মহান আল্লাহর কাছে কী জবাব দেব? যেদিন আমরা জিজ্ঞাসিত হবো, তার উত্তর আমাদের এখনই ঠিক করে নিতে হবে।
প্রতিটি মুহুর্তে আমাদের ভাবতে হবে- আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাকে দেখছেন। প্রভু আমাকে দেখছেন। সব কিছুর হিসেব একদিন তার কাছে দিতেই হবে।
প্রতিনিয়ত এ ভাবনা যদি অন্তরে লালন করতে পারি তাহলে আমরা পাপ থেকে বিরত থাকতে পারবো, ইনশাআল্লাহ! আসুন দোয়া করি- হে আমার রব! আমার মালিক। তুমি ক্ষমাশীল। দয়াময় প্রভু। আমি তোমার গোলাম। তোমার গোলামের সন্তান গোলাম। আমাকে মাফ করে দাও। আমাকে সঠিক পথে চলার তাওফিক দাও। আমাকে কবুল কর, হে বিচার দিবসের মালিক। আমিন।
জেনে নিন, ফজিলতপূর্ণ দোয়াটি!
নিয়মিত নামাজের সঙ্গে কিছু কিছু ইস্তেগফার পড়া উত্তম। তেমনই একটি ফজিলতপূর্ণ দোয়া হলো এটি। দোয়াটি নিয়মিত সকাল-সন্ধ্যায় পাঠ করুন।
দোয়াটি হলো-
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্বতানি, ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আ’হদিকা ওয়া ওয়া’দিকা মাসতাত্বা’তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানা’তু আবুউলাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়া, ওয়া আবুউ বিজামবি ফাগফিরলি ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক, তুমি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোনো উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার বান্দা। আমি আমার সাধ্যমতো তোমার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্টতা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই।
আমার ওপর তোমার অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমার পাপও স্বীকার করছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। নিশ্চয়ই তুমি ব্যতিত কোন ক্ষমাকারী নেই।’