অপমানিত হয়ে নিজেই মসজিদ তৈরি করলেন ভারতের এই নারী

2490

নিজেই তৈরি করলেন মসজিদ- ঘটনার শুরু ২০০০ সালে। ভরদুপুরে ভারতে উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনৌয়ের এক নারী তার ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হন্যে হয়ে একটা মসজিদ খুঁজছিলেন – নামাজ পড়ার জন্য। খবর বিবিসি’র।

কিন্তু তেলিবাগ এলাকায় কোনও মসজিদ খুঁজে পাচ্ছিলেন না শাইস্তা অম্বর।

শেষমেশ অবশ্য পেলেন একটা মসজিদের খোঁজ। তবে মিসেস অম্বরের ছেলেকে মসজিদের ভেতরে ডেকে নিলেও ইমাম তার মাকে মসজিদের দরজা থেকে সরে যেতে বলেছিলেন।

“আমার স্বামী সরকারি চাকরি করতেন। সেই সময়ে অন্য জায়গায় বদলি হয়ে গিয়েছিলেন। তাই আমি ভেবেছিলাম ছেলেকে নিয়ে গিয়ে নামাজ পড়িয়ে নিয়ে আসি।

কিন্তু যেভাবে ছেলেকে ভেতরে নিয়ে গেলেও আমাকে মসজিদের দরজা থেকে সরে যেতে বলা হয়েছিল, তাতে খুব অপমানিত মনে হয়েছিল। তখনই ঠিক করেছিলাম যে নারীদের জন্য মসজিদ হওয়া দরকার,” বিবিসিকে বলছিলেন মিসেস অম্বর।

যখন তিনি নারীদের জন্য আলাদা মসজিদ তৈরির চেষ্টা শুরু করলেন, তখন বাইরে থেকে তো হুমকি – ধমকি দেওয়া হতই, এমনকি স্বামী বা বাবার সঙ্গে তর্ক বেঁধে যেত মিসেস অম্বরের।

তিনি বলছিলেন, “কতবার যে আমার গাড়ির চাকা ফুটো করে দেওয়া হয়েছে! তবে একটাই ভরসা ছিল মনে মনে – যা করছি, সেটা উপরওয়ালা নিশ্চই বুঝতে পারছেন।”

জমি কিনে ২০০৫ সালে অম্বর মসজিদ তৈরি হয় লখনৌতে। প্রথমে শুধুই নারীরা নামাজ পড়তে আসতেন, তবে পরে পুরুষরাও এখন এখানে নামাজ পড়েন। শাইস্তা অম্বর অবশ্য শুধু নারীদের জন্য মসজিদ বানিয়েই থেমে থাকেননি। তিন তালাক প্রথার বিরুদ্ধেও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি সমান তালে।

অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড-এর সঙ্গে তিন তালাক প্রথা নিয়ে বিরোধ বাধায় মিসেস অম্বর আরও কয়েকজনের সহায়তা নিয়ে মুসলিম নারীদের জন্য পৃথক ল বোর্ড তৈরি করে ফেলেছেন – অল ইন্ডিয়া মুসলিম উইমেন পার্সোনাল ল বোর্ড। মুসলমান নারীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে এই সংগঠনটি।

লখনৌয়ের অম্বর মসজিদে গত দশ বছর ধরে প্রতি শুক্রবার বিশেষ শিবির খোলা হয় – যেখানে রেশন কার্ড বিলি থেকে শুরু করে কন্যাশিশুদের স্কুলে পাঠানোর মতো বিষয়গুলি নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়।

মসজিদের নামাজ পড়তে আসা কয়েকজন পুরুষও মনে করেন যে নারীদের উন্নয়নের জন্য যেসব কর্মসূচি নেওয়া হয় ওই মসজিদে, সেই পদক্ষেপগুলো যথেষ্ট প্রয়োজনীয়।

আরো পড়ুন: মুসলমানদের ক্বেবলা একদিন মুক্ত হবেই, সেদিন ইসরাইল পানির মতো ভেসে যাবে: ইরান

ইরান বলছে- মুসলমানদের এই প্রথম ক্বেবলা একদিন মুক্ত হবেই; সেদিন ইসরাইলের সঙ্গে তার সহযোগীরাও বানের পানির মতো ভেসে যাবে। স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের নামে ইহুদীবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বীকৃতির সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান।

তেহরান বলেছে, আবু ধাবি এ কাজ করে কৌশলগত নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়েছে এবং এর অবশ্যম্ভাবী ফল হিসেবে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে প্রতিরোধ অক্ষ শক্তিশালী হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাত মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সম্মত হওয়ার পর তেহরান এ প্রতিক্রিয়া জানাল।

শুক্রবার (১৪ আগস্ট) ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সকালে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলে। বিবৃতিতে বলা হয়, নির্যাতিত ফিলিস্তিনী জাতিসহ বিশ্বের কোনো স্বাধীনচেতা জাতি অবৈধ দখলদার ও অপরাধী ইসরাইলের সঙ্গে তার অপরাধের ভাগীদারদের এই সম্পর্ক স্থাপন প্রক্রিয়াকে কখনো ক্ষমা করবে না।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ফিলিস্তিনী ভূখণ্ড ও মুসলমানদের প্রথম ক্বেবলা আল-আকসা মসজিদ মুক্ত করার লক্ষ্যে গত সাত দশক ধরে যে প্রতিরোধ সংগ্রাম চলে এসেছে তা আজ হোক কিংবা কাল ইসরাইলসহ তার অপরাধের সকল সহযোগীকে একসঙ্গে গ্রাস করবে।

একটি অবৈধ ও মানবতাবিরোধী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে সংযুক্ত আরব আমিরাত চরম বিপজ্জনক কাজ করেছে। এই ঘটনার জের ধরে পারস্য উপসাগরে সম্ভাব্য যেকোনো পরিণতির জন্য আবুধাবিসহ এ অঞ্চলে তার সহযোগী সরকারগুলোকে দায়ী থাকতে হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইতিহাস বলে দেবে, সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ফিলিস্তিনি জাতিসহ গোটা মুসলিম উম্মাহর পিঠে যে খঞ্জর বসিয়েছে তার পরিণতিতে এ অঞ্চলের প্রতিরোধ আগের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হবে। সেইসঙ্গে ইহুদীবাদী ইসরাইল ও তার তাবেদার আরব শাসকদের বিরুদ্ধে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে জনগণের ঐক্য ও সংহতি শক্তিশালী হবে।