ডায়াবেটিস আমাদের সমাজে মহামারি আকার ধারণ করেছে। বিশ থেকে পঞ্চাশোর্ধ্ব কেউই বাদ পড়ছেন না এই রোগ থেকে। তাই তো সকালবেলা দেখা যায় রাজধানীর অলিগলিতে মানুষের মিছিল। হাঁটতে না চাইলেও দৌড়াতে হয় তাদের। যেন রীতিমতো বড় ধরনের শাস্তি।
ভুলে বা অলসতা বশত একদিন না হাঁটলে সারাদিন চাপা কষ্টে ভুগেন তারা। এ রোগ এড়িয়ে চলার কী উপায়? কেনই বা মানব শরীরে জেকে বসছে এমন রোগ। এমন প্রশ্ন নিয়ে হাজির হয়েছিলাম সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান কর্মকর্তা ডা. আমজাদুল হকের কাছে।
তিনি বললেন, শান্তির ধর্ম ইসলামে রয়েছে এর প্রতিকার। সাক্ষাৎকার থেকেই জানুন বাকিটা। ডা. আমাজাদুল হকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আওয়ার ইসলামের ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক সুফিয়ান ফরাবী।
আওয়ার ইসলাম : ডায়াবেটিস মানে কী, এটা কী ধরনের রোগ?
ডা. আমজাদুল হক : ডায়াবেটিস মানে এককথায় কিছু নিয়মনীতি মেনে চলা। আপনি যেসব কাজ সুস্থ থাকাকালীন সময়ে করতে পারতেন এখন পারবেন না, করলে আপনার শারীরিক অবনতি হবে, এটাই ডায়াবেটিস।
আওয়ার ইসলাম : ডায়াবেটিসের প্রতিরোধ কী, বা কী করলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না?
ডা. আমজাদুল হক: কিছু নিয়মনীতি মেনে চললে ডায়াবেটিস হবে না। যেমন ভোরে ভোরে ঘুম থেকে উঠা, শারীরিক ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত পরিশ্রম করা, লাগামহীন আহার থেকে বিরত থাকা।
আর এটা বেশ ভালো লাগে, আমাদের ধর্ম ইসলামে এই সবগুলোর কথা বেশ গুরুত্ব সহকারে বলা হয়েছে। যেমন ধরুন, ফজরের নামাজ পড়তে হলে ঘুম থেকে অবশ্যই তাড়াতাড়ি উঠতে হবে, আর তাড়াতাড়ি ওঠার ফলে তার ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
তারপর ইসলামে পরিশ্রমের কথা বলা হয়েছে। রাসুল সা. পরিশ্রম করতেন, নিজের কাজ নিজে করতে ভালোবাসতেন। রাসুল সা. এর এই সুন্নত মেনে চললে ডায়াবেটিস হবে বলে না।
ইসলামে বলা হয়েছে পেটকে তিনভাগে ভাগ করতে। একভাগ খাদ্য, একভাগ পানি ও একভাগ খালি রাখার কথা বলা হয়েছে। আমি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে বলতে পারি কেউ যদি ইসলামের এই তিনটি বিধান মেনে চলেন তাহলে তার ডায়াবেটিস হবে না।
আওয়ার ইসলাম : আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে ইসলামের সাথে মেডিকেল সায়েন্সের বেশ মিল রয়েছে, ব্যাপারটা আসলে কী?
ডা. আমজাদুল হক : ইসলাম ও মেডিকেল সায়েন্স উভয়টা একে অপরের পরিপূরক। ইসলামি বিধান মতো চললে শারীরিক শান্তি পাওয়া যাবে। যেমন ইসলামে বলা হয়েছে দাঁড়িয়ে পেশাব করা নিষেধ।
আর মেডিকেল সায়েন্স বলছে দাঁড়িয়ে পেশাব করলে কিডনিতে সমস্যা হয়। কারণ, দাঁড়িয়ে পেশাব করলে পেশাবের দুয়েক ফোটা ভেতরে থেকে যায়। আর এটা কিডনিতে সমস্যা হওয়ার অন্যতম কারণ।
আওয়ার ইসলাম: একটা উদাহারণ দিলে আমাদের বুঝতে সহজ হতো।
ডা. আমজাদুল হক: এর দৃষ্টান্ত এভাবে দেওয়া যায়, অসুস্থ রোগীকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। যাখন স্যালাইন শেষ হয়ে যায় তখন দুয়েক ফোটা বোতলে থেকে যায়৷ কারণ স্যালাইনের বোতল উপরে রাখা হয়েছে।
আওয়ার ইসলাম : আপনার গুরুত্বপূর্ণ সময় দেয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
ডা. আমজাদুল হক: আপনাদেরও আন্তরিক ধন্যবাদ।
সৌজন্যেঃ আওয়ার ইসলাম