কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে- চাল কুমড়া সবজি হিসেবে পরিচিত হলেও মোরব্বা, পায়েস ও কুমড়া বড়ি দিতেও কাজে লাগে।
ভেষজ ওষুধ হিসেবে চাল কুমড়ার ফল, ফুল এবং পাতা কাজে লাগে। যক্ষ্মা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাস্ট্রিকসহ অনেক রোগ ভালো হয় চাল কুমড়া খেলে।
কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা এবং প্রস্রাব কোনো কারণে অনিয়মিত হয়ে গেলে চাল কুমড়া খেতে দেওয়া হয়। চাল কুমড়ার রস কিছুটা গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কেটে যায়। চাল কুমড়ার রস প্রতিদিন ৪/৫ চা চামচ চিনি ও দুধের সঙ্গে দিয়ে পুরো দিন খেলে যক্ষ্মা রোগের উপসর্গ কেটে যায়।
যক্ষ্মা হয়নি অথচ কাশের সঙ্গে রক্ত বের হচ্ছে, এমন ক্ষেত্রে চাল কুমড়ার রস খেলে ভালো হয়ে যায়। এতে রক্ত বের হওয়া থেমে যায়। চাল কুমড়ার সঙ্গে বাসক পাতার রস মিশিয়ে খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। পেট ফাঁপার ক্ষেত্রে চাল কুমড়ার রস পেটে মালিশ করলে পেট ফাঁপা দ্রুত কেটে যায়।
বড়দের পেটে কৃমি হলে চাল কুমড়ার বীজের সাস বেটে খাওয়াতে হয়। চাল কুমড়ার বিচি গ্যাস্ট্রিক রোগের উপশম করে। চাল কুমড়া শরীরের মেদ কমায়। র’ক্তনালীতে র’ক্ত চলাচল সহজতর করে। এটি খেলে হৃদযন্ত্রের পেশি সবল হয়। এ কারণে চলিশোর্ধ রোগীদের চাল কুমড়ার হালুয়া পথ্য হিসেবে খেতে দেওয়া হয়। চাল কুমড়ার হালুয়ার সঙ্গে ছাগলের দুধ মিশিয়ে খেলে শরীর সতেজ থাকে।
কোমরে ব্যথা হওয়ার কারণ এবং তা থেকে মুক্তির উপায়
১. যাঁরা অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে একই ভঙ্গিতে কাজ করেন। এতে দেখা যায়, কোমরে ব্যথা প্রচণ্ড হয়ে থাকে।
২. বসার চেয়ার টেবিল ঠিকমতো না হলে বা ঠিকমতো না বসলে বা সামনে-পেছনে ঝুঁকে বসলে কোমরে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
৩. দীর্ঘক্ষণ ড্রাইভিং করলে বা বেশি সামনে ঝুঁকে গাড়ি চালালে কোমর ব্যথা হতে পারে। ড্রাইভিংয়ের সময় পেছনে কিছু সাপোর্ট নেওয়া উচিত।
৪. যাঁরা শুয়ে বা কাত হয়ে বই পড়েন বা অন্য কাজ করেন, তাঁদের মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ব্যথা অনুভূত হয়।
৫. অনেকেই আছেন যাঁরা কোনো ভারী জিনিস সঠিক নিয়মে তোলেন না। ফলে মেরুদণ্ডে অস্বাভাবিক চাপ পড়ে এবং তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যথা হয়।
চিকিৎসার জন্য যা যা করতে পারেনঃ
১. সমতল হালকা নরম বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে দুই হাত শরীরের দুই পাশে রেখে দুই পা সোজা করে শুতে হবে। হাঁটু ভাঁজ না করে এক পা ওপরের দিকে তুলুন যত দূর সম্ভব। ১০ সেকেন্ড পা তুলে রাখতে হবে। একইভাবে অপর পা ওপরে তুলুন এবং একই সময় নিন।
২. এবার একইভাবে হাঁটু ভাঁজ না করে একসঙ্গে দুই পা তুলুন এবং একই সময় নিন।
৩. এবার এক হাঁটু ভাঁজ করে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে হাঁটুকে বুকে লাগানোর চেষ্টা করুন। ১০ সেকেন্ড থাকুন। একইভাবে অপর হাঁটু বুকে লাগাতে হবে।
৪. একসঙ্গে দুই হাঁটু ভাঁজ করে দুই হাতে জড়িয়ে বুকে লাগাতে হবে।
৫. সর্বশেষ দুই পা সোজা করে পায়ের পাতার দিকে সটান করে ১০ সেকেন্ড রাখতে হবে।
কোমর ব্যথার চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হলো ব্যথা নিরাময় করা এবং কোমরের নড়াচড়া স্বাভাবিক করা। পূর্ণ বিশ্রাম কিন্তু দীর্ঘদিন বিশ্রাম নিলে ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায়। তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ওজন তোলা, মোচড়ানো পজিশন, অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম ও সামনে ঝুঁকে কাজ করা বন্ধ করতে হবে। সঠিক উপায়ে বসার অভ্যাস করতে হবে এবং প্রয়োজনে ব্যাক সাপোর্ট ব্যবহার করতে হবে।
গরম সেঁক (গরম প্যাড, গরম পানির বোতল বা উষ্ণ পানিতে গোসল) নিতে হবে। পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে। কিছু ব্যায়াম কোমরব্যথা প্রশমনে সাহায্য করে, এমনকি ওষুধের চেয়েও ভালো ফল দেয়। এই ব্যায়াম প্রতিদিন রাতে ও সকালে বিছানায় শুয়ে শুয়ে করতে পারেন। সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৭ মিনিট।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন ?
সব সময় ধরে বা জমে আছে- এ ধরনের ব্যথা। ভারী ওজন তোলা বা অতিরিক্ত কাজের পর তীক্ষ্ণ ব্যথা।
কোমর থেকে নিতম্ব, ঊরু ও পায়ের আঙুল পর্যন্ত ব্যথা বিস্তৃত হলে।
পায়ে দুর্বলতা বা অবশ ভাব হলে।
হাঁচি, কাশি দিলে বা সামনে ঝুঁকলে ব্যথা বেড়ে যায়। প্রস্রাব বা পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে।
শোয়া অবস্থায় বা শোয়া থেকে ওঠার সময় ব্যথা হলে।