গরীবদের জন্য ফিস শিথিলযোগ্য : ‘গরিবের ডাক্তার’ এজাজ

10103

গরিবের ডাক্তার হিসেবেই পরিচিতি লাভ করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা ডা. এজাজ। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

সরকারি দায়িত্ব পালন করে গাজীপুরে নিজের চেম্বারে সেখানকার মানুষদের চিকিৎসা দেন এজাজ।

অসহায় গরিব মানুষদের চিকিৎসা করতে খুবই অল্প পরিমাণ টাকা ভিজিট নিয়ে থাকেন তিনি। তাই সবাই তাকে ‘গরিবের ডাক্তার’ নামে ডাকেন।

নাটকের মাধ্যমে সারা বছর আলোচনায় থাকলেও সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় আবার আলোচনায় এসেছেন ডাক্তার এজাজ।

সোমবার (২২ এপ্রিল) এভারগ্রিন বাংলাদেশ নামে একটি ফেসবুক পেজে ডাক্তার এজাজের প্রশংসায় দেয়া একটি পোস্টের পর তাকে নিয়ে আলোচনায় মুখর হয়ে ওঠে ফেসবুক।

আব্দুল্লাহিল কাফী নামে এক ব্যক্তি ওই ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আমাদের দেশে এখনো ভালো এবং মানবিকতাসম্পন্ন ডাক্তার আছেন। তিনি হলেন বিশিষ্ট অভিনেতা ডা. এজাজুজ ইসলাম। এই ধরনের ডাক্তারের কাছে গেলেই রোগ ৫০% ভালো হয়ে যায়। রেস্পেক্ট স্যার।’

তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে চিকিৎসক এজাজুল ইসলামের ফি এর বিষয়টি। পোস্টকৃত ছবিতে দেখা গেছে, চিকিৎসার জন্য ৩০০ টাকা নিয়ে থাকেন ডা. এজাজ। রোগী পুরনো হলে ফি ২০০ টাকা। আর গরীবদের বেলায় ফিসের বিষয়টি শিথিলযোগ্য।

ফেসবুকে আপলোডের পরপরই অনেকেই শেয়ার করেছেন এই পোস্টটি। অনেকেই তার প্রশংসায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

ফেসবুকে হঠাৎ ভা’ই’রা’ল হওয়ার বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ডা. এজাজ বলেন,‘রোগীরা ভালোবেসে এমন পোস্ট দিয়ে বসেন। গত রাতে টাঙ্গাইল থেকে আসা রোগী চেম্বারের ছবি তুলে নিয়ে গেছেন। তিনিই হয়ত এটা ফেসবুকে ছড়িয়েছেন।’

গাজীপুরে ব্যক্তিগত চেম্বারে প্রতিদিন সন্ধ্যায় রোগী দেখেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘রোগীদের সুস্থ করে তুলতে সাধ্য মতো চেষ্টা করি। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।’

এ সময় অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আসছে ঈদের জন্য ‘ধামাকা অফার’ ও ‘ভাড়াটিয়া’ নামের মাসুদ সেজানের পরিচালনায় দুটি ৭ পর্বের নাটকে অভিনয় করছি।’

ডা. এজাজের নতুন খবর হলো তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগে প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন।

খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাইকে জানালেন নির্মাতা অনিমেষ আইচ। অনিমেষ আইচ বলেন, ‘দেশের মানুষের কাছে তিনি একজন স্বনামধন্য অভিনেতা পাশাপাশি একজন সুচিকিৎসক। সম্প্রতি তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হয়েছেন, অবশ্যই এটি আমাদের জন্য গর্ব ও আনন্দের।

এই নির্মাতা আরো বলেন, ‘কিন্তু এ নিয়ে কোন সংবাদ দেখলাম না কোন পত্রিকা কিংবা টেলিভিশন চ্যানেলে। অথচ কার সংগে কার ডিভোর্স হলো, কার সুন্দরী হওয়ার নেপথ্য ইতিহাস কি? এনিয়ে জাতির মাথা ব্যাথার অন্ত নাই। মিডিয়ার মানুষদের বিজয়ের গল্প ও সাধারন মানুষদের জানা দরকার। এ ইতিহাস কেবল কিছু বিভ্রান্তির গল্পে সীমাবদ্ধ নয়। অভিনন্দন এজাজ ভাই।’

যোগদানের বিষয়ে ডা. এজাজ বলেন, চিকিৎসক হিসেবে ব্যস্ততা তো আগে থেকেই ছিল। এখন নতুন দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ততা আরেকটু বেড়েছে। সবাই আমাকে অভিনয়শিল্পী হিসেবে ভালোবাসেন। এই ব্যস্ততার মাঝেও যখনই সময় বের করতে পারবো অভিনয় করবো। একই সঙ্গে চিকিৎসক হিসেবে আমার দায়িত্বও ঠিকভাবে পালন করে যাবো। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

উল্লেখ্য, ডা. এজাজুল ইসলাম রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮৪ সালে এমবিবিএস পাশ করেন। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি) থেকে নিউক্লিয়ার মেডিসিনে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

নন্দিত সাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের হাত ধরে মিডিয়ায় অভিনয় শুরু করেন এজাজ। সাবলীল অভিনয় নৈপুণ্যে তিনি নজর কেড়েছেন। ৩৯তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন ‘তারকাঁটা’ চলচ্চিত্রের জন্য।