ডায়াবেটিস দূরে রাখতে চাইলে- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত অসামান্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর পাশাপাশি ডায়াবেটিস অসংখ্য রোগ ডেকে আনতে পারে।
ডায়াবেটিস হলে খাবারের তালিকায় বড় ধরনের পরিবর্তন, প্রিয় অনেক খাবারই খেতে বারণ, নিয়মিত ইনসুলিন ইনজেকশন নেওয়া, এমন নানা কারণে তারা সব সময় ভয়ের মধ্যে থাকেন।
আমাদের পরিচিত একটি সবজি দূরে রাখতে সাহায্য করে এই ডায়াবেটিসকে। সেটি হলো ঢেঁড়স। এই সবজিটি নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস নিয়ে ভয়ে থাকতে হবে না। কারণ এর ভেতরে এমনকিছু উপাদান রয়েছে যা ডায়াবেটিসকে দূরে সরিয়ে আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
২০১১ সালে ভারতের কিছু বিজ্ঞানী কয়েকটি ইঁদুরের সুগার লেভেল কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়ে দেন একটি পরীক্ষার জন্য। র’ক্তে সুগারের মাত্রা বেশি থাকা কালীন তাদের খেতে দেওয়া হয় ঢেঁড়সের বীজ।
যা খাওয়ার পর অবিশ্বাস্য ভাবে কমে যায় সুগারের মাত্রা। এই পরীক্ষা তারা এক বিখ্যাত জার্নালে প্রকাশ করেন। ১০০ গ্ৰাম ঢেঁড়সের মধ্যে ক্যালোরির পরিমাণ মাত্র ৩৩। এই কারণেই এই খাবারকে অ্যান্টি ডায়াবেটিক খাবার বলা হয়ে থাকে।
সাধারণত খাওয়া দাওয়ার পর আমাদের র’ক্তে সুগারের পরিমাণ অনেকটা বেড়ে যায়। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কিন্তু ঢেঁড়স খেলে এমন ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই। তাই অনেক বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেন, যারা ডায়াবেটিসের আগের স্টেজ আছেন বা ডায়াবেটিস রোগে সবেমাত্র আক্রান্ত তারা কিন্তু ঢেঁড়স খেয়ে র’ক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।
দুশ্চিন্তার আধিক্যের জন্য ডায়াবেটিস রোগ চেপে বসে। এমনকি স্ট্রেস থেকে র’ক্তে সুগারের মাত্রাও বেড়ে যেতে পারে যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই দুশ্চিন্তা ও অত্যাধিক মানসিক চাপ থেক রেহাই একান্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞ দের মতে এক্ষেত্রেও ঢেঁড়সের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। ঢেঁড়সে আছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে কমাতে সাহায্য করে। এই স্ট্রেস কমলে আমাদের র’ক্তে সুগারের মাত্রা সহজে ওঠানামা করতে পারে না।
র’ক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে তা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মোটেই ভালো লক্ষণ নয়। হার্টের রোগের সমস্যা ও ডায়াবেটিস মিলে বড় সর্বনাশ করতে পারে যেকোনো রোগীর। তাই সুগারের মাত্রা ঠিক রাখার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন র’ক্তে’র কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ। ঢেঁড়সে কোনোরকম স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা কোলেস্টেরল থাকে না। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টই কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
ঢেঁড়সের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাজের শরীরের ক্লান্তি দূর করে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে কাজের শক্তি আনতে ক্লান্তি দূর করা একান্ত প্রয়োজন। আর তার সমাধান লুকিয়ে ঢেঁড়সে। এটি ক্লান্তি দূর করার পাশাপাশি কার্ডিও ভাসকুলার ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে যা শরীরকে সচল ও সতেজ রাখতে অত্যন্ত প্রয়োজন।
ঢেঁড়সে আছে প্রচুর ডায়েটরি ফাইবার। এতে থাকা ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ ডায়াবেটিস রোগীদের ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ডায়েটরি ফাইবার ক্ষুধা মেটানো ও খাবার ঠিক ঠাক হজম করাতে সাহায্য করে।
ঢেঁড়স রান্না করে খাওয়ার পাশা পাশি কেটে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সেই পানিও খাওয়া যায়। এতে ঢেঁড়সের সব গুণই থাকে। তবে না ধুয়ে ঢেঁড়স কখনোই খাবেন না।
সর্দি-কাশি সারাতে উপকারী যে ফলের রস!
আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় আমরা প্রায়ই সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হই। ঠাণ্ডা লাগলে নাক দিয়ে পানি পড়া, অসহ্য গলা ব্যথা কিংবা মাথা ব্যথা হয়। সামান্য সর্দি-কাশি হলে ওষুধ খাওয়া শুরু করেন অনেকেই। তবে ওষুধ ছাড়াও একটি ফলের রস সর্দি-কাশি সারাতে ভূমিকা রাখে।
সুস্বাদু এবং পুষ্টি গুণ সম্পন্ন আনারস সর্দি-কাশি সারাতে দারুণ উপকারী। ২০১০ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, আনারস যক্ষ্মা চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এতে থাকা নানা উপাদান গলা প্রশমিত করতে এবং কফ দ্রবীভূত করতে সহায়তা করে।
জীবাণু প্রতিরোধী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় আনারস হজমে সহায়তা করে। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ফলে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরী উপাদান অ্যালার্জি ও অ্যাজমা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
আনারসের রস বানানোর তিনটি পদ্ধতি রয়েছ। যেমন-
১. এক বাটি আনারস নিয়ে ব্লেন্ড করুন। এবার এতে এক চামচ মধু যোগ করুন। আনারস ও মধু দুটিই গলা এবং নাক পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
২. এক বাটি পরিমাণে আনারস ব্লেন্ড করুন। এবার এতে মধু, এক চিমটি লবণ আর এক চিমটি গোলমরিচের গুঁড়া যোগ করুন। দিনে তিনবার এ মিশ্রণটি পান করলে সর্দি-কাশির সমস্যা কমে যাবে।
৩. এক কাপ আনারসের রসে এক টেবিল চামচ মধু, এক চামচ আদা কুচি, ১ চিমটি লবণ, সামান্য মরিচের গুঁড়া নিয়ে ব্লেন্ড করুন। দিনে ৩ থেকে ৪বার এ মিশ্রণটি অল্প করে পান করুন। এতে গলা ব্যথা কিংবা সর্দি-কাশির সমস্যা কমে যাবে।