দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমকে একা ফেলে চলে গেছেন তার স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া। সঙ্গে নিয়ে গেছেন ছেলে জায়েদ ও মেয়ে আল জলিলাকে। বৃটেনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, তিনি ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে জার্মানিতে অবস্থান করছেন। সেখানে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন এবং স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ চেয়ে আবেদন করেছেন। তার সঙ্গে রয়েছে ৩ কোটি ১০ লাখ পাউন্ড। তা দিয়ে সেখানে তিনি নতুন জীবন পরিচালনা করতে চাইছেন। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি থেকে প্রিন্সেস হায়া’কে দেখা যাচ্ছে না।
৪৫ বছর বয়সী প্রিন্সেস হায়া সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন ৭ বছর বয়সী ছেলে জায়েদ ও ১১ বছর বয়সী মেয়ে আল জলিলাকে। তাদেরকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ফেরত দেয়ার জন্য বার্লিনের কাছে অনুরোধ করেছেন শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম। কিন্তু তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে বার্লিন। নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা প্রিন্সেস হায়া’কে নিরাপত্তা দেবেন।
এতে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখ্য, শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম দুবাইয়ের শাসক, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী। তিনি ৯০০ কোটি পাউন্ডেরও বেশি অর্থের মালিক।
ওদিকে বন্ধুজনদেরকে প্রিন্সেস হায়া বলেছেন, তিনি জার্মানিকে বেছে নিয়েছেন এ জন্য যে, বৃটেনের ওপর তিনি আস্থা রাখতে পারেন নি। কারণ, তিনি বৃটেনে গেলে তাকে দেশে ফেরত পাঠাতো তারা।
অন্যদিকে তার এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে পোস্ট দিয়েছেন শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম। তিনি এতে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনেছেন। বলেছেন, যার সঙ্গে ব্যস্ত থাকতে চাও তার কাছে যাও।
গত বছর একটি রিপোর্ট প্রকাশ হয় যে, শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের এক মেয়ে শেখ শামসা আল মাকতুমকে দুবাইতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ২০০০ সালে সারে’তে অবস্থিত তার পারিবারিক ৭ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ডের এস্টেটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। তারপর থেকে তার আর দেখা নেই। তবে পরিবার বলছে, তিনি দুবাইতে নিরাপদে আছেন।
ভ্রমণ ভিসায় আরব আমিরাত গিয়ে ভিক্ষা করে মাসে আয় ২৩ লাখ টাকা
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে ভিক্ষা করে মোটা অংকের অর্থ আয় করে এক নারী। তাকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। গত ৪ মে দুবাইয়ে এক ভিক্ষাবিরোধী সমাবেশে এ কথা জানায় দেশটির পুলিশ। ভিক্ষাবৃত্তি কাজে এক শিশু ও এক নবজাতককে ব্যবহার করে এক মাসে ২৩ লাখ টাকা আয় করেছেন তিনি। দুবাই পুলিশের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস জানায়, ২০১৮ সালে দুবাই থেকে গ্রেফতার হয় ২৪৩ জন ভিক্ষুক। ২০১৭, ২০১৬ ও ২০১৫ সালে এই সংখ্যা ছিলো ৬৫৩, ১ হাজার ২১ ও ১ হাজার ৪০৫। সে হিসাবে দুবাইয়ে ভিক্ষুকের সংখ্যা কমে আসছে।
দেশটির পুলিশের কর্মকর্তা ব্রি. আবদুল হামিদ আবদুল্লাহ আল হাসিমি বলেন, ওই ভিক্ষুক আরব আমিরাতের বাসিন্দা নন। কোনো পর্যটন কোম্পানির মাধ্যমে ভ্রমণ ভিসায় দুবাইতে এসে ভিক্ষাবৃত্তিতে যুক্ত হন তিনি। গত এক মাসে তিনি ভিক্ষা করে ১ লাখ দিরহাম (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৩ লাখ টাকা) আয় করেছেন। তিনি আরো বলেন, টুরিস্ট হয়ে দুবাই এসে ভিক্ষা করছে এমন ব্যক্তি ধরা পড়লে যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি এসেছেন তার ২ হাজার দিরহাম জরিমানা করা হবে। এই কাজের পুনরাবৃত্তি হলে ওই প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, শুধু এই ব্যক্তিই না, সম্প্রতি ভিক্ষা করে মোটা অংকের অর্থ আয় করা এক নারীকে গ্রেফতার করেছি আমরা। তিনি এ পেশায় বেশি অর্থ উপার্জন করতে এক শিশু ও এক নবজাতককে ব্যবহার করেছিলেন। প্রসঙ্গত, রমজানে দুবাইয়ে ভিক্ষুকের সংখ্যা বেড়ে যায়। এ সময় তারা ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ভিক্ষা করে থাকে। তাই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতি রমজানেই মাঠে নামে দেশটির পুলিশ।