ইতালিয় নারীর ইসলাম গ্রহণ- যুগ যুগ ধরে ইসলামের সোনালী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন অগণিত মানুষ। ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু, শিক্ষিত কিংবা অক্ষরজ্ঞানহীন কেউ বাদ যায়নি এ তালিকা থেকে। ইতালির রোমের অধিবাসী নারী মনোবিজ্ঞানী রোক্সানা ইলিনা নেগ্রা।
ইরানের মাশহাদ শহরের বিখ্যাত সাধক ইমাম রাজার সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। ইসলাম গ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মনোবিজ্ঞান বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা ও নবি-রাসুলদের জীবনাচার পড়েই ইসলামের সুমহান আদর্শে অনুপ্রাণিত হতে থাকেন।
পবিত্র কুরআন অধ্যয়ন করে ইসলামের আলোকিত জীবনে নিজেকে সাজাতে উদ্বুদ্ধ হন। আর তাতেই পেয়ে যান ইসলামের সুমহান সত্যের দাওয়াত।
রোক্সানা ইলিম নেগ্রার ভাষায়, ‘আমি মনোবিজ্ঞানের ছাত্র। আমি সব সময় শান্তির জন্য, সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্য এবং অসুস্থতা থেকে নিরাময়ের উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা ও গবেষণা করেছি। সব কিছু সুন্দর সমাধানে ইসলামকেই সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য হিসেবে পেয়েছি। ইসলামেই রয়েছে সব কিছুর সঠিক সমাধান।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইসলামের প্রধান ইবাদত ‘নামাজ’ অনুশীলন দুনিয়াতে প্রশান্তি লাভের অন্যতম সেরা মাধ্যম। যা মানুষ আল্লাহর ইবাদতের মাধ্যমে লাভ করে থাকে। নামাজের অনুশীলন পদ্ধতিও তাকে ইসলাম গ্রহণে আরো বেশি উদ্বুদ্ধ করে।
ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে করতে তিনি এ কথা বুঝতে সক্ষম হন যে, ইসলামই একমাত্র পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। শান্তি ও নিরাপত্তায় পরিপূর্ণ সত্য ও সঠিক জীবনাচার।
মাত্র ১২ রাকাত নামায, অথচ বিনিময় জান্নাতে ঘর!
টিবিটি ধর্ম ও জীবনঃ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে শয়তানের অনুসরণ থেকে বারণ করেছেন আর রাসুলুল্লাহ সা. আমাদের বলে দিয়েছেন, “তোমার ঈমানকে খাঁটি করো, অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট হবে।” পাশাপাশি তিনি খাঁটি ঈমানওয়ালাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে অল্প আমলেই জান্নাত লাভের বিভিন্ন অফার ঘোষণা করে রেখে গেছেন।
তেমনই একটি হল মাত্র বারো রাকাত পড়লেই বান্দার জন্য জান্নাতে তৈরি করা হবে ঘর। হযরত উম্মে হাবীবা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন, “আমি নবীজি সা. কে বলতে শুনেছি: যে ব্যক্তি দিনে ও রাতে বারো রাকাত নামায পড়বে, বিনিময়ে তার জন্যে জন্যে জান্নাতে ঘর নির্মাণ করে রাখা হবে। (সহীহ মুসলিম)
(এক) আম্মাজান উম্মে হাবীবা রা. বলেছেন:
-হাদীসটা শোনার পর থেকে আমি আর বারো রাকাত ছাড়িনি!
(দুই) আনবাসাহ বিন আবি সুফিয়ান রহ. বলেছেন:
-আমি উম্মে হাবীবা থেকে হাদীসটি শোনার পর থেকে কখনো বারো রাকাত ছাড়িনি!
(তিন) আমর বিন আওস রহ. বলেছেন:
-আমি আনবাসাহর কাছে হাদীসটা শোনার পর থেকে আমলটা বাকী জীবনে আর ছাড়িনি!
(চার) নু’মান বিন সালিম বলেছেন:
-আমি আমর বিন আওসের কাছে হাদীসটা শোনার পর থেকে আমলটা বাকী জীবনে আর ছাড়িনি!
এই বারো রাকাত হলো ফরযের অতিরিক্ত। আরেকটি হাদীসে বিস্তারিত আছে:
যে ব্যক্তি নিয়মিত অধ্যবসায়ের সাথে বারো রাকাত আদায় করে যাবে, তার জন্যে আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে ঘর বানিয়ে রাখবেন! যোহরের আগে চার রাকাত। পরে দুই রাকাত। মাগরিবের পর দুই রাকাত। ঈশার পর দুই রাকাত। ফজরের আগে দুই রাকাত (আয়েশা রা.-নাসায়ী)।
দুনিয়ার কত শত আয়েশি প্রাসাদের দিকে আমরা আকৃষ্ট হয়ে থাকি, যার অধিকাংশই হয়ে থাকে আমাদের সাধ্যের অতীত। কিন্তু দুনিয়ার এসবের সাথে তুলনাই হয় না এমন একটা নেয়ামতপূর্ণ জান্নাতি ঘরের মালিক বনে যেতে পারি অনায়াসেই। প্রতিদিন মাত্র বারো রাকাত নামায পড়লেই। এই হাদীসের একটা চমৎকার দিক হলো আগের জন থেকে পরের জন শোনার পর থেকেই আমলটা আর ছাড়েননি কখনও!
উক্ত হাদীস সম্পর্কে আমর বিন আনবাসাহ রহ. চমৎকার একটি কথা বলেছেন:
-আনবাসাহ বিন আবি সুফিয়ান মৃত্যুশয্যায় আমাকে বলেছেন: এই হাদীস মনে বড় আনন্দ দেয়। কতো সহজ আমল অথচ কী অবিশ্বাস্য প্রতিদান!
রাব্বুল আলামিন আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।