জান্নাতুল বাকিতে শুয়ে আছেন- মদিনার একটি বিখ্যাত কবরস্থানের নাম ‘জান্নাতুল বাকি’। এ কবরস্থানটি মসজিদে নববীর পূর্ব দিকে অবস্থিত। কিন্তু কোনো কবর চিহ্নিত নেই।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য স্ত্রী, কন্যা, ছেলে ও অন্য আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে হাজার হাজার সাহাবির কবর রয়েছে জান্নাতুল বাকিতে। ইমাম মালিক (রহ.)-এর মতে জান্নাতুল বাকিতে প্রায় দশ হাজার সাহাবির কবর রয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রায়ই শেষ রাতে জান্নাতুল বাকিতে যেতেন এবং দোয়া করতেন। দোয়ায় নবী করিম (সা.) বাকি কবরবাসীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতেন। কবর জিয়ারত করা প্রত্যেক স্থানেই শরিয়তসম্মত। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) হাদিসে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা কবর জিয়ারত করো, কেননা তা তোমাদের মৃ”ত্যু”কে স্মরণ করিয়ে দেবে।’ –সহিহ মুসলিম।
জান্নাতুল বাকিতে যাদের কবর রয়েছে তন্মধ্যে- নবী কন্যা হজরত ফাতেমা (রা.),ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত উসমান (রা.), উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা (রা.), নবীর চাচা হজরত আব্বাস (রা.), হজরত ইবরাহিম (রা.),
নবী দৌহিত্র হজরত হাসান (রা.), হজরত উসমান ইবনে মজউন (রা.), হজরত রোকাইয়া (রা.), ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা.), বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.),
হজরত সাআদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.), হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.), নবীর দুধমা হজরত হালিমা সাদিয়া (রা.) প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
মদিনায় অবস্থানরত হজপালনকারীদের মৃ”ত্যু হলে এই কবরস্থানে দা”ফ”ন করা হয়। সেই সঙ্গে মদিনাবাসীরা এখানে দা”ফ”নে”র সুযোগ পান।
এখনও প্রতিদিন এখানে লা’’শ দা”ফ”ন করা হয়। তবে বাকি কবরস্থানের শুরুর অংশে এখন আর নতুন করে কাউকে ক”ব”র দেয়া হয় না।
কারণ এসব অংশেই রয়েছে সাহাবাদের ক’ব’র। জান্নাতুল বাকী জিয়ারতের জন্য ফজর ও আসরের নামাজের পর খুলে দেয়া হয়।
তখন শুধু পুরুষরা জিয়ারতে জন্য ভেতরে যেতে পারেন। কারণ, নারীদের জন্য ইসলামি শরিয়তে কবর জেয়ারত করা বৈধ নয়।
ইসলামি স্কলারদের মতে, জান্নাতুল বাকিতে সমাহিতদের প্রতি সালাম দেয়ার সুন্নত পদ্ধতি হলো- অনির্দিষ্টভাবে সবাইকে একসঙ্গে সালাম দেয়া ও তাদের জন্য দোয়া করা।
মদিনার বয়স্ক ও অনুসন্ধানীদের কাছে জিজ্ঞেস করলে দু’একটি কবরের কথা তারা বলতে পারেন। যেমন, জান্নাতুল বাকিতে প্রবেশের মুখে আলাদা করে ঘেরাও করে রাখা কবর দু’টো।
এই দুই কবরের একটি হজরত ফাতেমা (রা.)-এর, অপরটি হজরত আয়েশা (রা.)। আর বাকি কবরস্থানের শেষের দিকে রয়েছে ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত উসমান (রা.)-এর কবর।
মদিনার মসজিদে নববিতে প্রথম বাংলায় বয়ান
বাংলা ভাষার আরেকটি জয়ের ফলক উন্মোচন হয়েছে। গত ৩০ জুলাই ২০১৯ প্রথম বারের মতো হাজিদের উদ্দেশ্যে মসজিদে নববিতে অভিজ্ঞ আলেম-ওলামাগণ বাংলা বয়ান করেছেন। বাংলায় বয়ানের ব্যবস্থা করায় মক্কা-মদিনার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আলেম-ওলামা ও শ্রোতারা আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
সারাবিশ্ব থেকে মুমিন মুসলমান পবিত্র নগরী মক্কায় হজ উপলক্ষে আগমন করেন। হজসহ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে নামাজের আগে ও পরে ধারাবাহিকভাবে চলে আলোচনা।
এ বছরই প্রথম বাংলা ভাষা-ভাষীদের জন্য বাংলায় বয়ানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে বাংলা ভাষা-ভাষীরা সুন্দরভাবে পবিত্র হজ ও ওমরা পালন করতে পারে। পাশাপাশি ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা লাভ করতে পারে।
উল্লেখ্য যে, গত ৩০ জুলাই থেকে মসজিদে নববিতে প্রতিদিন নিয়মিত চলছে বাংলা বয়ান। যা হজ ও ওমরার জেয়ারতকারীদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ বয়ানের ব্যবস্থা গ্রহণ করায় বাংলা ভাষা-ভাষী অংশগ্রহণকারী মানুষ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সন্তোষ প্রকাশ করেন।