মিরাজের রাতে যেসব পাপীকে দেখেছেন মহানবী (সা.)

2465

মিরাজের রাতে যেসব পাপীকে দেখেছেন- মিরাজ আল্লাহর প্রিয় নবী (সা.) এর অন্যতম শ্রেষ্ঠ অলৌকিক কীর্তি বা মুজেজা। মিরাজে গিয়ে তিনি জান্নাত ও জাহান্নাম সচক্ষে অবলোকন করেন।

সে রাতে তিনি কী কী দেখেছেন এবং কার কার সঙ্গে কথা বলেছেন, হাদিসের কিতাবে সেগুলোর বর্ণনা এসেছে।

হাদিসে এসেছে, ‘তিনি জাহান্নামে একদল লোক দেখলেন, যারা তামার তৈরি নখ দিয়ে অনবরত নিজেদের মুখমণ্ডল ও বুকে আঁচড় মারছে। জিবরাইল (আ.) বললেন, এরা মানুষের গো’শ’ত খেত (গিবত ও পরনিন্দা করত)। (আবু দাউদ, হাদিস নং: ৪৮৭৮, মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং: ৩/২২৪, তাফসিরে ইবনে কাসির, হাদিস নং: ৫/৯)

এরপর তিনি এমন কিছুসংখ্যক লোকের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন, যাদের জিব ও ঠোঁট আ’গু’নে’র কাঁচি দিয়ে কা’টা হচ্ছে। জিবরাইল (আ.) বলেন, এরা আপনার উম্মতের দুনিয়ায় স্বার্থপূজারি উপদেশদাতা, যারা অন্যকে সৎ কাজের নির্দেশ দিত, কিন্তু নিজের খবর রাখত না। (মা’আরেফুল কোরআন : ৩৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং : ১২২১১)

অতঃপর এমন এক সম্প্রদায়কে দেখলেন, পাথর দ্বারা যাদের মাথা চূর্ণবিচূর্ণ করা হচ্ছে। জিবরাইল (আ.) বলেন, তারা নামাজে অলসতা করত। (ফাতহুল বারি : ৭/২০০)

আল্লাহ আমাদের সব ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর আদেশ ও তার রাসুল (সা.) এর আদর্শ মোতাবেক জীবন গঠনের তাওফিক দান করুন।

গোনাহ মাফ ও মর্যাদা লাভের সহজ ৩ আমল

কাজ ছোট কিন্তু উপকারিতা বেশি, এমন অনেক উপায় ও উপদেশ তুলে ধরেছেন স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি তাঁর উম্মতকে পরকালে নাজাত লাভের জন্য ছোট এবং পালন করতে সহজ অসংখ্য সুযোগ ও সুবিধার কথা ও কাজের বর্ণনা করেছেন।

মানুষ ইচ্ছা-অনিচ্ছায় ভুল কিংবা পাপ করে থাকে। আর তা তাদের পরকালে নাজাতের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। গোনাহ মাফ এবং মর্যাদা লাভে ৩টি সহজ কাজের ছোট্ট একটি হাদিস তুলে ধরেছেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি কি তোমাদের বলব না, আল্লাহ কি দিয়ে তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেবেন এবং তোমাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন?

সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ‘হ্যাঁ’, (আপনি বলে দিন)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন-

১- কষ্ট থাকার পরও ভালোভাবে ওজু করা।

২- মসজিদের দিকে বেশি বেশি আসা-যাওয়া অব্যাহত রাখা। এবং

৩- এক নামাজ শেষ করে পরবর্তী নামাজের জন্য অপেক্ষা করা। আর এটাই হলে ‘রিবাত’ (প্রস্তুতি)।’ (মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)

হাদিসে উল্লেখিত ওজু, মসজিদে যাওয়া এবং নামাজের জন্য অপেক্ষা করার চেয়ে সহজ কাজ আর কী হতে পারে?

সুতরাং মানুষ প্রতিনিয়তই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে ওজু করে, মসজিদে দিকে যাতায়াত করে এবং নামাজ পড়ে। এসব কাজগুলেঅ একনিষ্ঠ নিয়তে আদায় করলেই আল্লাহ তাআলা তার বান্দার গোনাহ মাফ করে দেবেন এবং দুনিয়া ও পরকালে ওই বান্দার মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবির এ ছোট্ট ৩টি উপদেশ পালন করে গোনাহ থেকে মুক্ত থাকার এবং মর্যাদা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।