শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনি। প্রধানত দেহের ছাঁকনি হিসেবে কাজ করে এবং র’ক্ত থেকে দূষিত বর্জ্য পদার্থগুলো ছেঁকে বের করে দেয়। তবে কিডনির সমস্যা হলে বুঝবেন কীভাবে ?
শরীরের নানা উপসর্গ আপনাকে জানান দেবে যে, আপনি কিডনির সমস্যায় ভুগছেন ৷ জেনে নিন সেই উপসর্গ সম্পর্কে-
হাত ও পা ফুলে যাওয়া : কিডনি ঠিক মত কাজ না করলে শরীরে পানির পরিমাণ বাড়ে। ফলে হাত-পা ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
দুর্বল অনুভব হওয়া : কিডনির সমস্যায় শরীর থেকে সোডিয়াম বেরিয়ে যেতে পারে। ফলে আপনি সহজেই ক্লান্ত অনুভব করেন।
শুষ্ক ত্বক : ত্বক যদি শুষ্ক হতে থাকে ও চুলকায় তাহলে সাবধান হন। কিডনির কাজ না করলে ত্বকের সমস্যা হবে।
প্রস্রাবে র’ক্তে’র ছোঁয়া : স্বাভাবিক অবস্থায় কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ছাঁকার কাজ করে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া ঠিকভাবে না হলে র’ক্ত মিশতে পারে আপনার প্রস্রাবে।
ঘনঘন প্রস্রাবের প্রবণতা : কিডনি আমাদের প্রস্রাব তৈরির প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। কিডনির কাজ না করতে পারলে বার বার প্রস্রাবের প্রবণতা তৈরি হবে।
কিডনি রোগে ১২ টি লক্ষণ- মানব দেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হচ্ছে কিডনি। পৃথিবীতে মানবজাতি যেসব প্রা’ণ’ঘা’তী রোগে আ’ক্রা’ন্ত হয়ে মা”রা যাচ্ছে তার মধ্যে কিডনি রোগ অন্যতম।
এই কিডনি রোগ খুব নীরবে শরীরের ক্ষতি করে বলে এ অসুখকে নিরব ঘা ত ক বলা হয়। খুব জটিল অবস্থা না হওয়া পর্যন্ত সাধারণত এ রোগের লক্ষণগুলো ভালোভাবে প্রকাশ পায় না।
তাই কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো আগে থেকেই জেনে রাখা জরুরি এবং এর সঠিক চিকিৎসা কি হবে তাও জানা জরুরি।
১. প্রস্রাবে সমস্যা তুলনামূলকভাবে প্রস্রাব কম হওয়া কিডনি রোগের অন্যতম একটি লক্ষণ। শুধু তাই নয় রাতে ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগও কিডনি সমস্যার লক্ষণ প্রকাশ করে। সাধারণত কিডনির ফিল্টার নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে এই ধরণের সমস্যা দেখা দেয়।
২. প্রস্রাবে র’ক্ত সুস্থ কিডনি সাধারণত শরীরের ভিতরে র’ক্তে থাকা বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের সাথে বের করে দেয়। কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রস্রাবের সাথে ব্লাড সেল বের হয়ে যায়। সাধারণত কিডনি পাথর, কিডনি ইনফেকশন হলে এই সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এ ছাড়া প্রস্রাবে অনেক বেশি ফেনা দেখা দিলে বুঝতে হবে যে, প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন বের হয়ে যাচ্ছে। প্রস্রাবে অ্যালবুমিন নামক প্রোটিনের উপস্থিতির জন্যই এমন হয়।
৩. অনেক বেশি ক্লান্ত অনুভব হওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে র’ক্তে দূষিত এবং বি’ষা’ক্ত পদার্থ উৎপন্ন হয়। যার কারণে আপনি ক্লান্ত, দুর্বল অনুভব করেন। এমনকি কাজে মনোযোগ হারিয়ে ফেলেন। এই সময় র’ক্ত স্বল্পতা দেখা দিয়ে থাকে। দুর্বলতা অনুভব করার আরেও একটি কারণ এটি।
৪. পায়ের গোড়ালি ও পায়ের পাতা ফুলে গেলে হঠাৎ করে পায়ের পাতা এবং গোড়ালি ফুলে যাওয়া কিডনি রোগের অন্যতম লক্ষণ। কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে দেহে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে যায়, যার কারণে পায়ের পাতা, গোড়ালি ফুলে যেয়ে থাকে।
৫. খাবারে অরুচি বিভিন্ন কারণে খাবারে অরুচি হতে পারে। কিন্তু এটি ঘন ঘন খাবারে অরুচি হওয়া, বমি বমি ভাব লাগাকে অবহেলা করবেন না। শরীরে বি’ষা’ক্ত পদার্থ উৎপাদন হওয়ার কারণে এই ধরণের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
৬. চোখের চারপাশ ফুলে যাওয়া যখন কিডনি থেকে বেশি পরিমাণে প্রোটিন প্র স্রা বের সাথে বের হয়ে যায়, তখন চোখের চারপাশ ফুলে যায়। তাই এই সমস্যাকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
৭. মাংসপেশিতে টান আপনি হয়তো শুনে থাকবেন ইলেক্ট্রোলাইট উপাদানের ভারসাম্যহীনতার কারণে কিডনি সমস্যা হয়ে থাকে। আর এই উপাদানটি কমে গেলে মাংসপেশী টান, খিঁচুনি সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
৮. ত্বকে র্যাশ এবং চুলকানি দেখা দেওয়া রক্তে মিনারেল এবং পুষ্টি উপাদান ভারসাম্যহীন হয়ে পড়লে ত্বকে র্যা শ এবং চুলকানি দেখা দিয়ে থাকে। মূলত কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে শরীরে মিনারেল এবং পুষ্টি উপাদানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়ে থাকে।
৯. ৬ বছর বয়সের পরেও রাত্রে বিছানায় প্রস্রাব করা।
১০. প্রস্রাব করার সময় জুলন অনুভব করা এবং প্রস্রাবে র”ক্ত বা পুজ-এর উপস্থিতি।
১১. প্রস্রাব করার সময় কষ্ট হওয়া। ফোটা ফোটা করে প্রস্রাব হওয়া।
১২. প্রস্রাবের বেগ কম আসা।
কিডনির রোগের নির্ণয় কিডনির অনেক রোগ-চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। জটিল কিন্তু সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না। দুর্ভাগ্যবশত অনেক গভীর কিডনির রোগের লক্ষণ শুরুতে কম দেখা যায়। এই জন্য যখনই কিডনির রোগের আশঙ্কা হয়, তখনই বিনা বিলম্বে ডাক্তারবাবর সঙ্গে পরামর্শ করে নির্ণয় এবং চিকিৎসা শুরু করা দরকার।
সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন খেলে কী কী উপকার হয়
অনেকের কাছেই সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন খাওয়াটা ভীষণ অস্বাস্থ্যকর মনে হতে পারে। কিংবা অনেকেই মনে করতে পারেন যে এটা স্রেফ একটা কুসংস্কার।
কিন্তু আসলেই কি তাই? একদম না! খালি পেটে রসুন খাওয়া দেহের জন্য ভীষণ স্বাস্থ্যকর একটি ব্যাপার। বরং খালি পেটে রসুন খেলে এমন কিছু উপকার হয়, যেটা অন্য খাবারের সাথে রান্না করা করা অবস্থায় খেলে হয় না।
চলুন, জেনে নিই খালি পেটে রসুন কীভাবে খাবেন ও কেন খাবেন।
কীভাবে খাবেন: খালি পেটে রসুন অবশ্যই খেতে হবে সকালে, নাস্তা করার আগে। চিবিয়ে খেতে না চাইলে পানি দিয়ে গিলে ফেলুন দুই কোয়া রসুন। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই টুকরো করে নেবেন।
কেন খাবেন: খালি পেটে রসুন খেলে রসুনের কার্যকারিতা আরো বেড়ে যায়, এটি পরিণত হয় একটি শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকে।
গবেষকদের মতে খালি পেটে রসুন খাওয়া হাইপারটেনশন ও স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে, অন্যদিকে হজমের গণ্ডগোল রোধ করে। স্ট্রেস থেকে পেটে গ্যাসের সমস্যা হলে সেটাও প্রতিরোধ করে খালি পেটে রসুন।
অন্যদিকে পেটের গণ্ডগোল জনিত অসুখ, যেমন ডায়রিয়া হলে এই খালি পেটে রসুন দ্রুত তা সারিয়ে দেয়। সকালে খালি পেটে রসুন খাওয়া শরীরের রক্ত পরিশুদ্ধ করে ও লিভারের ফাংশন ভালো রাখতেও সহায়তা করে। যাদের রসুনে অ্যালার্জি আছে তাঁরা এড়িয়ে চলুন।