টেস্টোস্টেরন হরমোন- ছেলেদের বয়ঃসন্ধির সময় তাদের শারীরিক পরিবর্তন সমূহ, যেমন- পেশির বৃদ্ধি, কণ্ঠস্বর গভীর হওয়া এবং চুল বা লোম বৃদ্ধির পেছনে প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করে এই টেসটোসটেরন হরমোন।
টেসটোসটেরন প্রধানৎ পুরুষ সে”ক্স হরমোন, তবে নারীদেরও এটি অল্প পরিমাণে রয়েছে। এটা একটা সে”ক্স হরমোন, যা পুরুষদের শুক্রাশয়ে এবং নারীদের ডিম্বাশয়ে উৎপাদিত হয়।
গবেষকরা বেশ জোরালোভাবেই এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে, নারী-পুরুষ উভয়ের শরীরেই পরিমিত মাত্রায় টেস্টোরেন থাকা উচিত। বিশেষ করে ১৩ বছর বয়সে তো এটি অবশ্যই নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পুরুষের শরীরে এই হরমোন কমে গেলে কী কী লক্ষণ দেখা দেয়—তাই নিয়ে আজকের আয়োজন।
বাড়তি ওজন : দেহের বাড়তি ওজনের কারণে টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাব দেখা দেয়। কারণ ফ্যাট সেল তখন টেস্টোস্টেরনকে ইস্ট্রোজেনে রূপান্তর করে। স্থূলকায় মানুষের দেহে এমনিতেই এই হরমোনের ঘাটতি থাকতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম ও ওজন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এ অভাব থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
অবসাদ : দুপুরের খাবারের পর অনেকেরই দুর্বল ভাব চলে আসে। অফিসের টেবিলে প্রায়ই উদ্দীপনা হারিয়ে যায়। যেকোনো উদ্যমী কাজে উত্সাহ মেলে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ঘটলে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করানো উচিত।
ঘুমে ব্যাঘাত : যে পুরুষের এই হরমোনের ঘাটতি আছে তার সাধারণত নিয়মিত ঘুম হয় না। এই ঘুম না হওয়া আবার হৃদরোগ, মেজাজ বিগড়ে যাওয়া এবং স্মৃতিশক্তিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিষণ্নতা : ‘জার্নাল অব সেক্সুয়াল স্টাডি’তে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, টেস্টোস্টেরনের অভাব রয়েছে—এমন ৫৬ শতাংশ পুরুষ বিষণ্নতায় ভোগে।
অস্বস্তি ও ব্যথা : এই হরমোনের অভাবে প্রতিনিয়ত অস্বস্তি বোধ হতে পারে। এ ছাড়া পেশি তার শক্তি হারায় এবং হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথা অনভূত হয়। এর প্রভাবে পরবর্তী সময়ে বড় ধরনের আঘাতের সম্মুখীন হয় মানুষ।
হাড়ের সমস্যা : ধারণা করা হয়, এই সমস্যা কেবল নারীদেরই দেখা দেয়। কিন্তু যে পুরুষদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যায়, তাদেরও এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা গেছে। কারণ এ হরমোনের অভাবে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়।
মনোযোগের অভাব : মস্তিষ্ক ‘ঘোলাটে’ করে দেয় এই হরমোনের অভাব। এতে মনোযোগ নষ্ট হয়। স্মৃতিশক্তিও কমে আসে ধীরে ধীরে।
এখানে টেস্টোরেণ মাত্রা বৃদ্ধির তথ্যপ্রমাণ ভিত্তিক ৮টি উপায় নিয়ে আলোচনা করা হল।
১.ব্যায়াম এবং ভারোত্তলন
ব্যায়াম হচ্ছে মানুষের জীবনধারা সম্পর্কিত অনেক রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর উপায়গুলোর অন্যতম। মজার ব্যাপার হলো, এটি আপনার টেসটোসটেরন হরমোন বৃদ্ধিরও সহায়ক। একটি ব্যাপক গবেষণা পর্যালোচনায় দেখা যায়, যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তারা তাদের টেসটোসটেরন লেভেল, ফিটনেস এবং রিএকশন টাইমের উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হন। স্থূলকায় মানুষের মধ্যে পরিচালিত এক নতুন গবেষণায় প্রতীয়মান হয় যে, টেসটোসটের লেভেল বাড়ানোর জন্য ওজন কমানোর খাদ্যের চেয়ে শারীরিক পরিশ্রম বেশি উপকারী। টেসটোসটের মাত্রা বৃদ্ধির লক্ষে ভারোত্তলনের মতো স্বল্প এবং দীর্ঘ মেয়াদি প্রতিরোধ প্রশিক্ষণ হচ্ছে সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম। উচ্চ তীব্রতা ব্যবধান প্রশিক্ষণও খুব কার্যকরী হতে পারে।যদিও সব ধরনের ব্যায়ামেরই উপকার রয়েছে। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সাথে ক্যাফেইন গ্রহণ এবং সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ক্রিয়েটিন মনোহাইড্রেট টেসটোসটেরনের লেভেলকে আরো বেশি উন্নতি করতে পারে।
২. প্রোটিন, ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট খান:
আপনি যাই খান তার একটি বড় প্রভাব টেসটোসটেরন সহ অন্যান হরমোন লেভেলের উপর পড়ে।সেকারণে আপনাকে অবশ্যই আপনার দীর্ঘমেয়াদি ক্যালরি গ্রহণ এবং খাদ্য কৌশলের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।বিরামহীন খাবার গ্রহণ বা অতি ভোজন আপনার টেসটোসটেরন মাত্রাকে ব্যাহত করতে পারে।
পর্যাপ্ত প্রটিন খাবার গ্রহণ টেসটোসটেরনের সুস্থ মাত্রা বজায় রাখতে এবং চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া কার্বোহাইড্রেটরও একটি ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে।গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরচর্চার সময় কার্বেোহাইড্রেট টেসটোসটেরন মাত্রার উন্নতিতে সাহায্য করে।এমনকি সুস্থ্ ফ্যাটও টেসটোসটেরন মাত্রার উন্নয়নে সাহায্য করে।ফ্যাট, প্রোটিন এবং কার্বের সঠিক ভারসাম্যের ভিত্তিতে তৈরি খাদ্য তালিকাই সবচেয়ে ভাল। এটি টেসটোসটেরন লেভেল এবং দীর্ঘ মেয়াদি স্বাস্থ্য উভয়ের জন্যই ভাল।
৩. মানসিক চাপ দুশ্চিন্তা এবং কর্টিসল হরমোনের লেভেল কমান
মেডিকেল গবেষণা সব সময়ই দীর্ঘ মেয়াদী প্রেসার- উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বা মানসিক চাপের বিপদকে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরে, যা কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।
কর্টিসল হরমোনের অপ্রাকৃত বৃদ্ধি টেসটোসটেরন হরমোনের দ্রুত হৃাস ঘটাতে পারে। এই দুটি হরমোন ঢেকিকল পদ্ধতিতে কাজ করে; একটি বাড়লে অন্যটি কমে।
মানসিক চাপ এবং উচ্চ কর্টিসলের কারণে খাদ্যগ্রহণ এবং ওজন বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের প্রত্যেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ক্ষতিকর চর্বি জমা হতে থাকে।এসবের ফলে আপনার টেসটসটেরন লেভেলে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
সুস্বাস্থ্য এবং টেসটস্টেরন হরমোন লেভেল উভয়ের জন্যই আপনাকে আপনার জীবনের পুনরাবৃত্তিমূলক চাপ পরিস্থিতি কমাতে হবে।
পুরো খাবার ভিত্তিক খাদ্যতালিকা, নিয়মিত ব্যায়াম, ভালো ঘুম, হাসি এবং একটি ভারসাম্যপূর্ণ লাইফস্টাইলের প্রতি মনোনিবেশ করুন; কেননা, এসব আপনার মানসিক চাপ এবং কর্টিসল লেভেল কমাতে এবং টেসটসটেরণ লেভেল বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
৪. কিছু রোদ অথবা ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন
ভিটামিন ডি দ্রুত বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিটামিনগুলোর অন্যতম হয়ে উঠছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, এর মধ্যে মানব দেহের জন্য বিভিন্ন রকম উপকারিতা রয়েছে এবং এটি প্রাকৃতিক টেস্টস্টেরন জোরদারে সহায়ক হতে পারে।
এত গুরুত্ব সত্ত্বেও মার্কিন জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের মধ্যে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি রয়েছে, এবং এমনকি যারা এটি গ্রহণ করছে তাদেরও একটি বিরাট অংশ যথার্থ মানে গ্রহণ করছে না।
এক বছর মেয়াদী এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি দিন প্রায় ৩০০০ আইইউ ভিটামিন ডি প্রতিস্থাপিত করে টেস্টোস্টেরন মাত্রা প্রায় ২৫ শতাংশ (৫৪) বৃদ্ধি করা যায়।
বৃদ্ধ বয়সে ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম টেস্টোস্টেরন মাত্রা জোরদার করে এবং এটি ক্ষয় বা ভঙ্গুরতার ঝুঁকি কমানোর কাজ করে।
টেসটোসটেরন জোরদার এবং ভিটামিন ডি’র অন্যান্য উপকারিতা লাভ করার জন্য নিয়মিত রোদ্রস্নাত করার চেষ্টা করুন অথবা অথবা নিয়মিত প্রায় ৩০০০ আইইউ ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন।
৫. ভিটামিন ও খনিজ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন:
মাল্টিভিটামিন গুলোর উপকারিতা নিয়ে যদিও তুমুল বিতর্ক রয়েছে, নিদির্ষ্ট কিছু ভিটামিন এবং খনিজ উপকারী হতে পারে।
একটি গবেষণায় দেখা যায়, জিংক এবং ভিটামিন বি সাপ্লিমেন্ট শুক্রানুর মান ৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি করে।এছাড়া জিংক এথলেটদের টেসটোসটেরনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং যাদের মধ্যে জিংকের ঘাটতি রয়েছে তারা এটি গ্রহণ করতে পারে।
এছাড়া ভিটামিন এ, সি এবং ই আপনার সেক্স হরমোন এবং টেসটোসটেরন লেভেল উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে বলে অন্যান্য গবেষণায় দেখা গেছে, যদিও আরো গবেষণা প্রয়োজন।
টেসটোসটের উপর গবেষণায় দেখা গেছে, সহজলভ্য সকল ভিটামিন ও খনিজ সমূহের মধ্যে ভিটামিন ডি এবং জিংক সাপ্লিমেন্ট সমূহই সবচেয়ে ভাল হতে পারে।
৬. পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং গভীর ঘুম
খাদ্য এবং ব্যায়ামের মতই ভাল ঘুম আপনার দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার টেসটোসটেরন লেভেলের উপরও বিরাট প্রভাব ফেলতে পারে।
ঘুমের আদর্শ পরিমাণ বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু একটি গবেষণায় দেখা যায়, রাতের বেলা মাত্র ৫ ঘন্টা ঘুম যথেষ্ট নয়, টেসটোসটেরন লেভেল ১৫% হ্রাস পায়। (৭৩)
একটি দীর্ঘ গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা রাতের বেলা মাত্র ৪ ঘন্টা ঘুমায় তাদের টেসটোসটেরন লেভেল ঘাটতির পরিমাণ ৪৬%, যাকে বলা যায় ঘাটতির চূড়ান্ত পর্যায়। অন্যান্য দীর্ঘ মেয়াদী গবেষণাও একে সমর্থন করে।
অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ঘন্টা অতিরিক্ত ঘুমের ফলে টেসটোসটেরন লেভেল ১৫% বৃদ্ধি পায়। (৭৪, ৭৫)। প্রতি রাতে ৭ থেকে ১০ ঘন্টা ঘুম দীর্ঘ-মেয়াদী সুস্বাস্থ্য এবং টেসটোসটেরন লেভেলের জন্য সবচেয়ে ভাল বলে গবেষণায় দেখা যায়।
৭.কয়েকটি প্রাকৃতিক টেসটোসটেরন বুস্টার, যা গ্রহণ করতে পারেন
মাত্র কয়েকটি প্রাকৃতিক টেসটোসটেরন বুস্টার বৈজ্ঞানিক গবেষণা দ্বারা সমর্থিত। যে ঔষধি গাছটির পেছনে বেশি গবেষণা হয়েছে সেটিকে বলা হয় অশ্বগন্ধা। বন্ধা পুরুষদের চিকিৎসায় এই ভেষজটির প্রভাব বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত। এক গবেষণায় দেখা যায়, অশ্বগন্ধা সেবনে টেসটোসটের লেভেল ১৭% বৃদ্ধি পায় এবং স্পাম কাউন্ট বৃদ্ধি পায় ১৬৭%।(৭৬)
সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা ১৫% লেভেল বৃদ্ধি করে। আরেকটি গবেষণায় দেখা যায়, এটি প্রায় ২৫% কর্টিসল হরমোন হৃাস করে যা টেসটোসটেরনের জন্য সহায়ক।
আদার রসও টেসটোসটেরন লেভেল বাড়াতে সাহায্য করে।এটি একটি সুস্বাদু ঔষধি যার অন্যান্য উপকারীতাও রয়েছে। আদা নিয়ে বেশিরভাগ গবেষণাই করা হয়েছে পশুদের উপরে। যাইহোক, বন্ধা পুরুষদের উপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, আদা ১৭ % পর্যন্ত টেসটোসটেরন লেভেল বৃদ্ধি করতে পারে এছাড়া অন্যান্য প্রধান সে”ক্স হরমোন লেভেলও বৃদ্ধি করতে পারে।
পুরুষের সে”ক্স হরমোন টেস্টোস্টেরন বাড়ায় যেসব প্রচলিত খাবার
সাধারণত খাবারে ভিটামিন এবং মিনারেলের ভারসাম্য ঠিক থাকলে শরীরে এন্ড্রোক্রাইন সিস্টেম সক্রিয় থাকে। আর তা শরীরে এস্ট্রোজেন এবং টেস্টোস্টেরনের তৈরি হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এস্ট্রোজেন এবং টেস্টোস্টেরন সেক্সের ইচ্ছা এবং পারফরমেন্সের জন্য জরুরি।
তাই সেক্স পাওয়ার বা যৌন শক্তি শুধুমাত্র প্রাকৃতিকভাবেই পাওয়া সম্ভব। আজকাল অনলাইনে, পথে-ঘাটে, হাট-বাজারে সেক্স বাড়ানোর যে গল্প বা ঔষধ পাওয়া যায় সেইগুলির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি দেখে তবেই কেন উচিত। ভেজালময় জীবনে কি খেলে বাড়বে যৌন কামনা আসুন একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নেই।
খেজুর
প্রতিদিন প্রাতরাশ খাওয়ার সময় খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। মাখনের সাথে খেজুর মিলিয়ে খেলে যৌ”নশক্তি বৃদ্ধি পায়, সেই সাথে শরীরের গঠন বাড়ে ও কন্ঠস্বর পরিস্কার হয়। খেজুর চুষলে তেষ্টা কম হয়। খেজুর দেহের শিরা কোমল করে এবং প্রসব ও শিরায় খিচুনির ফলে “আকটান পেইন” নামক যে ব্যাথা সৃষ্টি হয় তা দূর করে। মহিলাদের মধ্যে যৌ”ন উত্তাপ সৃষ্টি করে।
মধু
মাখন ও মধু একত্রে মিশ্রণ করে খেলে Pleurisy তথা বক্ষাবরক ঝিল্লি প্রদাহ রোগের উপকার হয় এবং শরীর মোটা করে।খাঁটি মধুতে সে”ক্স পাওয়ারের সকল উপাদান বিদ্যমান। এছাড়াও সকালে খালি পেটে জিহ্বা দ্বারা মধু চেটে খেলে কফ দূর হয়, পাকস্থলী পরিস্কার হয়, দেহের অতিরিক্ত দূষিত পদার্থ বের হয়, গ্রন্থ খুলে দেয়, পাকস্থলী স্বাভাবিক হয়ে যায়, মস্তিস্ক শক্তি লাভ করে, স্বাভাবিক তাপে শক্তি আসে, র”তি শক্তি বৃদ্ধি হয়, মূত্রথলির পাথর দূর করে, প্রস্রাব স্বাভাবিক হয়, গ্যাস নির্গত হয় ও ক্ষুধা বাড়ায়। প্যারালাইসিসের জন্যও মধু উপকারি।
কলিজা
যৌ”ন জীবনে খাদ্য হিসেবে কলিজার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ, কলিজায় প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে। আর এই জিঙ্ক শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়ায়। যথেষ্ট পরিমাণ জিঙ্ক শরীরে না থাকলে পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসৃত হয় না। পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে যে হরমোন নিঃসৃত হয় তা টেস্টোস্টেরন তৈরি হওয়াতে সাহায্য করে। তাছাড়া জিঙ্ক এর কারণে আরোমেটেস এনজাইম নিঃসৃত হয়। এই এনজাইমটি অতিরিক্ত টেস্টোস্টেরোনকে এস্ট্রোজেনে পরিণত হতে সাহায্য করে। এস্ট্রোজেনও যৌ”ন”তা”র জন্য প্রয়োজনীয় একটি হরমোন।
রসুন
ডাক্তারদের মতে রসুনে অনেক উপকারিতা রয়েছে। রসুন ফোড়া ভালো করে, ঋ’তু’স্রা’ব চালু করে, পেশাব জারী/স্বাভাবিক করে, পাকস্থলী থেকে গ্যাস নির্গত করে, নিস্তেজ লোকদের মধ্যে যৌ”ন ক্ষমতা সৃষ্টি করে, বী”র্য বৃদ্ধি করে, গরম স্বভাব লোকদের বী”র্য গাঢ় করে, পাকস্থলী ও গ্রন্থর ব্যাথার উপকার সাধন, এ্যাজমা এবং কাঁপুনি রোগেও উপকার সাধন করে। তবে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অধিক রসুন ব্যাবহার ক্ষতিকর।
সব্জির বীজ
কুমড়োর বীজ, সূর্যমূখীর বীজ, শিম বীজ, ইত্যাদিতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে এবং এগুলো শরীরে উপকারী কোলেস্টেরল তৈরী করে। সে”ক্স হরমোন গুলো ঠিক মতো কাজ করার জন্য এই কোলেস্টেরল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শিমের বীচিতে প্রচুর ফাইটোস্ট্রোজেন থাকে। এটা আপনার যৌ”ন ইচ্ছা এবং যৌ”ন সামর্থ্য বাড়ায়। জাপানিরা যৌ”ন ইচ্ছা বাড়ানোর জন্য খাবারে প্রচুর শিমের বীচি ব্যবহার করে থাকে। ওটমিল এবং কুমড়ার বীচির মত সূর্যমুখীর বীজ হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে আপনার যৌ”ন আকাঙ্ক্ষাও বাড়ে। সূর্যমূখীর বীজে যে তেল থাকে তা এই কাজটি করে। কুমড়ার বীচি জিঙ্ক-এর অন্যতম সেরা প্রাকৃতিক উত্স। এই জিঙ্ক টেস্টোস্টেরোনের মাত্রা বাড়ায়। আপনার যৌ”ন ইচ্ছা বাড়ানোতে কুমড়ার বীচির কার্যকারিতা অনেক।
ডিম
ডিম যৌ”ন স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-৫ ও বি-৬ আছে যা শরীরের হরমোনের কার্যক্রম ঠিক রাখে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিনের সকালের নাস্তায় একটি করে ডিম রাখুন। এতে আপনার শরীর শক্তি পাবে এবং যৌ”ন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
দুধ
দুধ র’তি’শ’ক্তি সৃষ্টি করে দেহের শুস্কতা দূর করে এবং দ্রুত হজম হয়ে খাদ্যের স্থলাভিষিক্ত হয়ে যায়; বী”র্য তৈরি করে, চেহারা লালচে হয়, দেহের অপ্রয়োজনীয় দূষিত পদার্থ বের করে দেয় এবং মস্তিস্ক শক্তিশালী করে। বেশি পরিমাণ প্রাণিজ-ফ্যাট আছে এ ধরনের প্রাকৃতিক খাদ্য সে”ক্স পাওয়ারের উন্নতি ঘটায়। যেমন, খাঁটি দুধ, দুধের সর, মাখন ইত্যাদি। বেশিরভাগ মানুষই ফ্যাট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে চায়। কিন্তু আপনি যদি শরীরে সে”ক্স হরমোন তৈরি হওয়ার পরিমাণ বাড়াতে চান তাহলে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট জাতীয় খাবারের দরকার। তবে এই ফ্যাট হতে হবে প্রাকৃতিক এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট।
সামুদ্রিক মাছ
সামুদ্রিক বা তৈলাক্ত মাছে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড যা সুস্থ যৌ”ন জীবনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড DHA O EPA শরীরে ডোপামিন বাড়িয়ে দেয় এবং মস্তিষ্কে উদ্দীপনা জাগিয়ে তোলে। তৈলাক্ত ও সামুদ্রিক মাছ খেলে শরীরের র”ক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং গ্রোথ হরমোনের নিঃসরন হয়। ফলে যৌ”ন স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং যৌ”ন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
রঙিন ফল
সে”ক্স পাওয়ার ঠিক রাখতে চাইলে প্রতিদিন খাবার তালিকায় রঙিন ফলমূল রাখুন। আঙ্গুর, কলা, কমলা লেবু, তরমুজ, পিচ ইত্যাদি ফল যৌ”ন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপকারী। ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের মেডিকেল টিমের গবেষণা অনুযায়ী, একজন পুরুষের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় অন্তত ২০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকলে তার স্পা’র্মে’র কোয়ালিটি উন্নত হয়। আবার টেক্সাসের A&M ইউনিভার্সিটির মতে, তরমুজ শরীরে যৌ”ন উদ্দীপনা বৃদ্ধি করে। তারা যৌ”ন উদ্দীপক ওষুধ ভা’য়া’গ্রা’র সাথে তরমুজের তুলনা করেছেন।
জয়ফল
গবেষকদের মতে, জয়ফল থেকে এক ধরনের কামোদ্দীপক যৌগ নিঃসৃত হয়। সাধারণভাবে এই যৌগটি স্নায়ুর কোষ উদ্দীপিত করে এবং র”ক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। ফলে যৌ”ন ইচ্ছা বৃদ্ধি পায়। আপনি কফির সাথে মিশিয়ে জয়ফল খেতে পারেন, তাহলে দুইটির কাজ একত্রে পাওয়া সম্ভব।
টাটকা সবজি
তরতাজা ও ফরমালিনমুক্ত শাক সবজিতে প্রচুর পরিমানে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন পাওয়া যায়। পালং শাকে আছে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম। ম্যাগনেসিয়াম শরীরে র”ক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। জাপানের গবেষকদের মতে, শরীরে র”ক্ত চলাচল বাড়লে যৌ”ন উদ্দীপনাও বাড়ে। পালং শাক ও অন্যান্য বিভিন্ন রকম শাক, ব্রকলি, লেটুস, ফুলকপি, বাঁধাকপি এগুলোতে রয়েছে ফলেট, ভিটামিন বি সহ অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। মোটকথা হচ্ছে যে, তাজা শাক সবজি সুস্থ যৌ”ন জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু শুধু শর্করার ভালো বিকল্পই না, মিষ্টি আলু খুব ভালো ধরনের একটি ‘সে”ক্স’ ফুড। শরীর কোনো সবজিতে বিটা-ক্যারোটিন পেলে তা ভিটামিন-এ তে রূপান্তরিত করে। এই ভিটামিন-এ নারীদের যোনি এবং ইউটেরাসের আকার ভালো রাখে। তাছাড়া এটা সে”ক্স হরমোন তৈরিতেও সহায়তা করে।
ডার্ক চকলেট
ডার্ক চকোলেটে আছে ফেনিলেথ্যালামাইন নামক একটি উপাদান যা শরীরে বাড়তি যৌ”ন উদ্দীপনা তৈরী করে। গবেষণায় জানা গেছে যে, ডার্ক চকোলেট খেলে সঙ্গীর প্রতি আকর্ষণবোধ বেড়ে যায়। এছাড়াও ডার্ক চকোলেটে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। তাই প্রতিদিন শতকরা ৭০ ভাগ কোকোযুক্ত ডার্ক চকোলেটের ২ ইঞ্চির একটি টুকরো খেয়ে নিন। মাত্র ১০০ ক্যালরী আছে এই আকৃতির একটি টুকরো, আপনার যৌ”ন স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
কালো জিরা
এটা যৌ”ন”তা”র ভারসাম্য রাখার পাশাপাশি শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি ও স্তন্যকে সুগঠিত করে। পক্ষাঘাত বা প্যারালাইসিস ও কম্পন রোগে কালোজিরার তৈল মালিশ করলে আশ্চর্যজনক ফল পাওয়া যায়। কালোজিরা যৌ”ন ব্যাধি ও স্নায়ুবিক দুর্বলতায় আ”ক্রা”ন্ত রোগীদের জন্য উত্কৃষ্ট মানের ঔষধ। সর্দি, কাশি, বুকের ব্যাথা, পাকস্থলীতে বায়ু সঞ্চয় (অম্লপিত্ত) শুলবেদনা ও প্রসূতি রোগে অত্যধিক উপকারী। ব্রনের জন্যও উত্তম ঔষধ। এবং এতে শ্লেষ্মা, পুরাতন জ্বর, মূত্রথলির পাথর ও পান্ডুরোগ (কামিলা, জন্ডিস) আরোগ্য লাভ করে। তাছাড়া এটা মুদরে হায়েজ বা অধিক ঋ”তু স্রা”ব, মুদরে বাওল বা মাত্রাতিরিক্ত পেশাব প্রতিরোধক ও ক্রিমিনাশক।
বাদাম
চিনা বাদাম, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম ইত্যাদিতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে। এগুলো শরীরে প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল তৈরী করার পাশাপাশি সেক্স হরমোন গুলোকে সঠিকভাবে পথনির্দেষ করে। তাই প্রতিদিন অল্প করে হলেও বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে যৌ”ন স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকবে। চীনা বাদামে প্রচুর জিঙ্ক থাকে। এই জিঙ্ক শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়ায় এবং শক্তিশালী শু’ক্রা’ণু তৈরি করে। জিঙ্ক কম থাকলে শরীরে শতকরা ৩০ ভাগ কম বীর্য তৈরি হয়। যারা খাদ্যের মাধ্যমে শরীরে কম জিঙ্ক গ্রহণ করে তাদের বীর্য এবং টেস্টোস্টেরনের ঘনত্ব দুটিই কমে যায়। বাদাম খাওয়ার মাধ্যমে এটা পূরণ হয়ে যায়।
কিসমিস
মানব শরীরে যৌ”ন উদ্দীপনা বা যৌ”ন শক্তি বৃদ্ধিতে কিসমিসের সাথে অন্য কোন কিছুর তুলনা হয় না। আঙ্গুর ফলকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় কিসমিসে রুপান্তর করা হয়। কিন্তু গুনের দিক থেকে আঙ্গুরের চাইতে কিসমিসের অবদান অনেক বেশি।
সর্বোপরি চিন্তা বা দুশ্চিন্তা থেকে নিজের মনকে শান্ত রাখতে চেষ্টা করুন অন্তত আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সাথে যখন সময় কাটাচ্ছেন। মনে আনন্দ থাকলে নার্ভগুলো অনেক সচল থাকে। যার সুপ্রভাব পরে আপনার যৌ”ন জীবনে।