চট্টগ্রামে বিসমিল্লাহ্ মেডিকোকে ২২০ টাকার স্যাভলন ৫৫০ টাকায় বিক্রি করায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নগরের বড় পাইকারি ওষুধের বাজার হাজারী লেইনে এটি অবস্থিত।
সোমবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা তদারকিমূলক অভিযানে এ জরিমানা করেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সহায়তায় পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ, বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তার, সহকারী পরিচালক (মেট্রো) পাপীয়া সুলতানা লীজা ও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, আজকের অভিযানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অননুমোদিত রং ব্যবহার, বেশি দামে পণ্য বিক্রি ও মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করাসহ বিভিন্ন অপ’রাধে চকবাজারের মাওলানা স্টোরকে (০১) পাঁচ হাজার টাকা,
চন্দনপুরা এলাকার শরীফ স্টোরকে দশ হাজার টাকা, মাওলানা স্টোরকে ছয় হাজার টাকা, সিডিএ কর্নফুলী মার্কেটের খাজা আমানত স্টোর ও জামাল অ্যান্ড ব্রাদার্সকে পাঁচ হাজার টাকা করে এবং আরবি ব্রাদার্সকে দুই হাজার টাকা, নেভিহাসপাতাল গেইট এলাকার কামাল স্টোরকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ সময় ভোক্তাসাধারণকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে পণ্য কিনতে, মাস্ক-গ্লাভস পরতে অনুরোধ করা হয়।
কোনো বিক্রেতা যদি বেশি মূল্যে পণ্য বা ওষুধ বিক্রি করে অথবা বিক্রির প্রস্তাব করে তবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের হটলাইন নম্বরে (১৬১২১) অভিযোগ জানাতে বা তথ্য দিতে অনুরোধ জানান কর্মকর্তারা।
দুঃস্থদের সহায়তা করতে মায়ের গলার চেন বেচে প্রধানমন্ত্রীকে টাকা দিল প্রতিবন্ধী রাহুল
মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো কিশোরগঞ্জ সুইড বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের ছাত্র রাহুল বিশ্বাস। মায়ের গলার চেন বিক্রির ১৫ হাজার ৩০০ টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে দান করে অনন্য নজির স্থাপন করেছে রাহুল।
সোমবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের ডিসির বাংলোয় উপস্থিত হয়ে জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর হাতে অনুদানের নগদ টাকা হস্তান্তর করে রাহুল। এ সময় রাহুল বিশ্বাসের সঙ্গে তার মা শোধা রাণী বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।
তাদের বাড়ি জেলার করিমগঞ্জের গুজাদিয়ার খয়রতহাটি গ্রামে। সে স্নাতক শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে। একই সঙ্গে গ্রামে একটি ছোট ফার্মেসিও চালায়। তার বাবা নেই। কিশোরগঞ্জের সুইড বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের ছাত্র ছিল সে।
করোনা দু’র্যো’গকালে এই তরুণ মানুষের জন্য কিছু একটা করার তাগিদ থেকে মায়ের গলার চেন বিক্রির টাকা প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছেন, এটা সহজ কথা নয়। এগুলো ছোট প্রয়াস হলেও মানবতার জন্য বড় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। টাকা গ্রহনের পর এ কথা বলেন জেলা প্রশাসক।
ওই স্কুলের পরিচালনা কমিটির সঙ্গে জড়িত আইনজীবী মায়া ভৌমিক জানালেন, করোনা’ভাই’রাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে রাহুল এলাকায় তার ফার্মেসি থেকে অন্তত ২০ হাজার টাকা ওষুধ লোকজনকে বিনামূল্যে দিয়েছে। মায়ের কাছে জমানো পনের হাজার টাকা ছিল। সেগুলো নিয়ে দুর্ভোগে পড়া লোকজনের মাঝে বিতরণ করেছে। এ সব করতে গিয়ে ব্যবসার ক্ষতি হলেও মাকে সান্তনা দিয়েছে যখন সু-দিন আসবে, তখন এ ক্ষতি পুষিয়ে নেবে।
সুধা রাণী বিশ্বাস বলেন, হাতে টাকা নেই। নিজেদেরও অনেক সমস্যা। ছেলের বায়না আরও কিছু একটা করা দরকার। প্রধানমন্ত্রীর হাতে কিছু টাকা না দিতে পারলে সে কিছুতেই শান্তি পাবে না। ফলে বাধ্য হয়ে ছেলের হাতে আমার গলার চেনটি তুলে দিলাম। সেই সোনার চেনটি বিক্রি করে টাকা নিয়ে এসেছি। এগুলো যেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়।
রাহুল জানায়, করোনার কারণে মানুষের দুঃখ-কষ্ট দেখে মনটা কাঁদছিল তার। মাকে বলে না-বলে তার মতো সাহায্য সহযোগিতা করছিল সে। কিন্তু তার মনে হলো, প্রতিবন্ধীরাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আছে, এ কথা তিনি তাঁকে জানাতে চান। তাই মায়ের চেন বেচে টাকাটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছেন। তার টাকা গ্রহণ করায় জেলা প্রশাসকের কাছে এ সময় কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করে সে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আজই রাহুলের টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, যাদের দেওয়ার ক্ষমতা নেই, তারাই কিন্তু সরকারকে নানা ভাবে সহযোগিতা করছে। আমরা চাই মানুষের সহযোগিতায় বিত্তবানরাও রাহুলদের মতো এগিয়ে আসবেন।