আতা ফল আমরা সবাই চিনি। এই ফল খেতে খুবই সুস্বাদু। শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিগুণেও পরিপূর্ণ এই ফলটি। এতে রয়েছে প’টাসিয়াম ও ম্যা’গনেসিয়াম।
আতা ফলের বেশ কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে। সবগুলোকেই ইংরেজিতে কা’স্টার্ড অ্যাপল, সুগার অ্যাপল, সুগার পা’ইনএপল বা সুইটসপ বলা হয়। অঞ্চলভেদে নামের কিছু পার্থক্য রয়েছে আতা ফলে।
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। তাছাড়া নানান রোগ প্রতিরোধে আতা বেশ উপকারী। চলুন জেনে নেয়া যাক আতা ফলে গুণাগুণ সম্পর্কে-
১) আপনি যদি ডায়াবেটিসে আ’ক্রান্ত হন, তাহলে র’ক্তের গ্লু’কোজ মাত্রা কমাতে আতা ফল খাওয়া শুরু করুন। এছাড়াও, কা’স্টার্ড আ’পেলের ডায়াবেটিস ফাইবারের উপস্থিতিতে চিনির শোষণ কমানো যায়।
২) আতা ফলে থাকা ম্যাগনেসিয়াম আপনার কা’র্ডিয়াক সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে এতে থাকা ভিটামিন বি-৬ হো’মোকিসস্টাইন নিয়ন্ত্রণ করে।
৩) আতা ফলের বীজ ক্ষ’ত শুকাতে সাহায্য করে। এই বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের গভীরে থাকা কো’ষের পু’নঃবৃদ্ধি পায় এবং ক্ষত স্থানের ব্য’থা তাত্ক্ষণিকভাবে পালায়। এই বীজে এন্টি-ব্যা’কটেরিয়াল প্রো’পার্টি রয়েছে।
৪) হাঁ’পানি রোগী হিসেবে যদি আপনি মূলার রস খেয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আতা ফলের রস খাবেন। এটি ভিটামিন বি-৬ স’মৃদ্ধ যা আপনার হাঁ’পানি প্র’তিরোধে সাহায্য করবে।
৫) গা’ইনোকোলজির মতে, গর্ভাবস্থায় আতা ফল খাওয়া গ’র্ভপাতের ঝুঁ’কি হ্রাস করে। সকালের দূ’র্বলতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শা’রীরক ব্যথার উ’পশম ঘটায়।
৬) গর্ভাবস্থার পরে আতা ফল খাওয়ার ফলে স্তনে দুধ উত্পাদন বৃদ্ধি পায়। ৭) ডায়াটেরি ফাইবার সমৃদ্ধ এই ফলটি খুব সহজেই হজম হয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আতা ফলের গুঁড়া এক গ্লাস জলে মি’শিয়ে খেলে আপনার ডায়রিয়ার সমস্যাও মুহূর্তেই গায়েব হবে।
৮) আতা গাছের পাতার নির্যাস স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। স্তনের কোষে থাকা বিষাক্ত টক্সিন দূর করে।এছাড়া অ্যা’ন্টি-অক্সিডেন্টপূর্ণ আতা ফল আপনার শরীরের কোষগুলোকে বিভিন্ন ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে।
৯) বিশেষজ্ঞরা সপ্তাহে অন্তত একবার দাঁত পরিষ্কার করার জন্য আতা ফলের চামড়া ব্যবহার করে সুপারিশ করেন। এটি ব্যবহারের ফলে দাঁত ক্ষয় রোধ হয় এবং মাড়িকে আরো মজবুত করে।
সহজ ৪ অভ্যাস রোগ থেকে দূরে রাখবে
১. হাত ধোয়ার অভ্যাস, নখ ছোট রাখা
কোনো কিছু খাওয়ার আগে অবশ্যই হাত সাবান–পানি দিয়ে ১৫–২০ সেকেন্ড সময় ধরে ভালো করে ধুয়ে নিন। এ ছাড়া টয়লেট ব্যবহারের পরে, যেকোনো ময়লা বস্তু স্পর্শ করার পর, না-ধোয়া ফলমূল, শাকসবজি ধরার পরে, হাত দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে হাঁচি দেওয়ার পরে বা হাত দিয়ে নাক পরিষ্কার করার পরে হাত ধুয়ে নিন।
হাত না ধুয়ে কখনোই কোনো কিছু মুখে দেবেন না। এমনকি নাকে ও চোখেও লাগাবেন না। হাতের নখ ছোট রাখুন। হাতের নখ ছোট রাখা ও নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস টাইফয়েড, আমাশয়, কলেরা, ডায়রিয়া, হেপাটাইটিস-এ, কৃমিরোগ, চোখ ওঠা ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
২. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
খাবার খান সময়মতো। কোনো বেলার খাবারই একেবারে বাদ দেবেন না। বিশেষ করে সকালের নাশতা। খাবার হতে হবে সুষম। খাবারে থাকতে হবে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ক্যালরি, খাদ্য-আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। শাকসবজি গ্রহণ করুন পর্যাপ্ত। তেলের পরিমাণ ও ধরন হতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত।
সুষম খাদ্যাভ্যাস ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, কিছু কিছু ক্যানসার ও স্থূলতা প্রতিরোধে সহায়ক। মাছি বসা খাবার, বাসি খাবার, অনেকক্ষণ বাইরে রেখে দেওয়া খোলা খাবার বা অপরিষ্কার হাতে পরিবেশন করা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। খাওয়ার পরে, বিশেষ করে রাতে, দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস করুন।
৩. নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম
হাঁটা, দৌড়ানো, জগিং করা, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো ইত্যাদি শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের উদাহরণ। প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন যেকোনো ব্যায়াম করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে তা ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, উচ্চ র’ক্তচাপ, স্থূলতা, কিছু কিছু ক্যানসার ইত্যাদি প্রতিরোধে সহায়ক হবে।
৪. পরিচ্ছন্নতা বোধ
নিয়মিত গোসল করুন। পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় পরবেন। অন্যের ব্যবহার করা ব্যক্তিগত জিনিস যেমন রুমাল, তোয়ালে, চিরুনি, টুথব্রাশ, টুপি, জামাকাপড় ইত্যাদি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। যেখানে–সেখানে কফ–থুতু ফেলবেন না কখনো। রাস্তাঘাটে তো নয়ই। যেখানে–সেখানে ময়লা–আবর্জনাও ফেলবেন না। সাধারণত এসব নাগরিক অভ্যাস থেকেই বেশির ভাগ রোগ ছড়ায়।