কিডনি সুস্থ রাখতে ৫ পরামর্শ- আমাদের শরীরের ছাকনির কাজ কে করে জানেন? কিডনি র”ক্ত থেকে দূষিত পদার্থ মূত্রের আকারে বের করে দেয় কিডনি। একই সঙ্গে শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখে।
কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাই শরীরে দেখা দেয় হাজারো সমস্যা। এবং কিডনি কাজ করা বন্ধ করে দিলেই আপনি শেষ।
তাই সবার আগে যে আপনাকে সুস্থ রাখে তার দেখভাল করুন। এমন ফল, সবজি খান যাতে সোডিয়াম কম থাকে। সঙ্গে প্রচুর পানিপান করতেও ভুলবেন না।
কীভাবে ভালো রাখবেন কিডনি-
১. সোডা ড্রিঙ্ক দূরে থাক-
সোডা বা কার্বোনেটেড ড্রিঙ্ক খেতে খুব ভালো লাগলেও শরীর পক্ষে ভীষণ ক্ষতিকর। প্রথমত, এতে আছে প্রচুর চিনি। যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়। একই সহ্গে কিডনির পক্ষেও ক্ষতিকর। তাই ইনস্ট্যান্ট এনার্জি পেতে লেবু-চিনির শরবত বা ডাবের পানি তালিকায় রাখুন। এতে কিডনি ভালো থাকবে। আপনিও সব সময়েই চাঙা।
২. লবণ খাওয়া কমান-
প্লেট কাঁচা লবণ খাওয়া মানেই কিডনির বারোটা বাজা। লবণের মধ্যে থাকা সোডিয়াম কিডনি নষ্ট করতে দেয়। তাই পাতে আলগা লবণ খাওয়া পারলে বন্ধ করুন। না পারলে সল্ট শেকারে লবণ রাখুন। তাতে প্লেটে অল্প লবণ পড়বে।
৩. বাইরের খাওয়া এড়ান-
টিন ভর্তি প্রসেসড ফুড বা ডাঙ্ক ফুড শুধু ওবেসিটি বাড়ায় না, কিডনিরও ক্ষতি করে। তাই চেষ্টা করুন বাড়িতে রান্না করা খাবার খেতে। এতে খাবার সহজে হজম হবে। ভালো থাকবে কিডনিও।
৪. প্রচুর পানিপান মানেই সুস্থ কিডনি-
যত পানি পান করবেন তত শরীরের বিষ মূত্রের আকারে বেরিয়ে যাবে। এতে শরীর ও কিডনি দুটিই ভালো থাকবে। চট করে কোনো সংক্রমণ কিডনিকে আক্রান্ত করতে পারবে না। শুধু পানি পান করতে ভালো না লাগলে ডাবের পানি বা লেবু-চিনির শরবতও খেতে পারেন। এতেও একই ফল মিলবে।
৫. সবজি, ফল ডায়েটে থাক-
বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্লু-বেরি, ক্যআনবেরি, পেঁয়াজ, রসুন, মুলো, আনারস, আঙুর, বেল পেপারে সোডিয়াম কম থাকে। আর সোডিয়াম কম যুক্ত ফল, সবজি কিডনির পক্ষে ভালো। তাই তালিকায় এই ফল, সবজি বেশি করে রাখুন।
কিডনি ভালো রাখতে হলে যেসব খাবার ভুলেও খাবেন না।
১. প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি বা তরল খাবার খাওয়া উচিত। তবে অতিরিক্ত ঘাম হলে পানি খাওয়ার পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেলে কিডনিতে পাথর হয় না এবং এর স্বাভাবিক কার্যক্রম ঠিক থাকে।
২. মানুষের শরীরে প্রতিদিন মাত্র ১ চা চামচ লবণের চাহিদা থাকে। তাই কিডনি সুস্থ রাখতে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া পরিহার করার অভ্যাস করুন।
২. গরুর মাংস, শুকরের মাংস ইত্যাদি খেলে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এমনকি চিপস, ফাস্টফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ইন্সট্যান্ট নুডলস এবং লবণ দিয়ে ভাজা বাদামও কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
৩. খাবার তালিকায় অতিরিক্ত প্রোটিন থাকলে কিডনির ওপর চাপ পড়ে এবং কিডনির দুর্বল কোষগুলোর ক্ষতি হওয়ার আশংকা থাকে। তাই প্রাণিজ প্রোটিন এড়িয়ে মাছ বা ডাল জাতীয় প্রোটিন রাখুন।
৪. রক্তচাপ ১৪০/৯০ এর উপরে থাকলে কিডনির সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই কিডনি ভালো রাখতে রক্তচাপ সবসময় ১৩০/৮০ অথবা এর কম রাখার চেষ্টা করুন।
৫. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে কিডনির রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। নিয়মিত রক্তের সুগারের পরিমাণ পরীক্ষা করান। সুগার বেশি থাকলে মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
৬. কম বেশি প্রায় সব ওষুধই কিডনির জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে ব্যথানাশক ওষুধগুলো কিডনির জন্য একেবারেই ভালো নয়। নিয়ম না জেনে নিজে ওষুধ খাবেন না।
৭. মানুষের শরীরে প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রামের বেশি ভিটামিন সি এর প্রয়োজন নেই। নিয়মিত প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশংকা থাকে। তাই প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রাম বা এর কম ভিটামিন সি গ্রহণ করুন।
৮. অনেকেই পানির বদলে কোমল পানীয় বা বিভিন্ন রকমের এনার্জি ড্রিঙ্কস খেয়ে থাকেন। এ ধরনের পানীয় কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
৯. ধূমপান ও মদ্যপানের কারণে ধীরে ধীরে কিডনিতে রক্ত চলাচল কমে যেতে থাকে এবং এর ফলে কিডনির কর্মক্ষমতাও হ্রাস পায়। ফলে ধূমপায়ী ও মদ্যপায়ী ব্যক্তি একপর্যায়ে গিয়ে কিডনির রোগে আক্রান্ত হয়।