শাকিবের প্রথম সন্তান রাহুল খানের মা আমি: রাত্রি

1795

সবার কাছে তিনি শাকিব খান হলেও, ওই নারীর কাছে তিনি কেবলই ছিলেন মাসুদ রানা।

সাধারণ মাসুদ রানা যখন শাকিব খান হয়ে উঠেনি তখনই রাত্রি নামের সেই তরুণীর প্রথম ভালোবাসা ছিলেন তিনি।

তারকা খ্যাতির শীর্ষে ওঠার যাত্রায় একের পর এক শাকিব পিছুটান কেটেছেন চোখবুজে। অদৃশ্য রক্তপাতহীন এই কর্তনের বলি হয়েছেন রাত্রি। সম্পর্কে শাকিব খানের প্রথম স্ত্রী বা বলা যায় তার প্রথম সন্তানের মা।

সম্প্রতি একটি অনলাইনের অনুসন্ধানে উঠে আসে এফডিসির এই ওপেন সিক্রেট বিষয়টি।

প্রোডাকশন বয় থেকে শুরু করে অনেক সাংবাদিকের কাছেও এটা জানা ঘটনা। নিকট অতীত না হওয়ার কারণেই হয়তো কেউ আর এটার চর্চা করেন না। কারো সঙ্গে আলাপ করতে গেলেই কেউ রহস্যজনক হাসি হাসেন অথবা হেসেই উড়িয়ে দেন।

তবে এবার সামনে এলেন রাত্রি। এক পুত্র সন্তানের জননী জানান তার সন্তান রাহুল খানের বাবা শাকিব খানই।

তবে স্বাভাবিক প্রশ্ন আসে তিনি কেন তার অধিকার আদায়ের জন্য সামনে আসেননি। শান্ত কন্ঠে তিনি জানিয়েছেন, যে ভালোবাসার কারণে এতোগুলো বছর চুপ থেকেছি, এখন আর মুখ খুলে কী লাভ?

শাকিব যদি কোনোদিন বুঝতে পারে, ফিরে আসে তাহলে আমার আর কিছু চাই না। এর বাইরে মুখ খুলিনি কারণ আমি চাইনি আমার হিরোর (শাকিব খানের) কোনো ক্ষতি হোক।

এদিকে নিজেকে শাকিবের প্রথম সন্তানের মা হিসেবে দাবি করে রাত্রি বলেন, আমি আর আমার আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন।

আমি জোর গলায় বলতে চাই শাকিব খানের প্রথম সন্তানের মা আমি। আমার রাহুলের বাবা শাকিবই। এটা শাকিবও অস্বীকার করতে পারবে না।

যদিও রাত্রির কথায় জানা যায় তারা বিয়ে করেননি। অধিক মেলামেশা থেকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক হয়। সম্পর্কের গভীর কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনাবশত রাত্রি সন্তান কনসেপ্ট করেন।

পরে শাকিব তাকে গর্ভপাতের জন্য বারংবার অনুরোধ করলেও মায়ের মমতার কাছে সেই অনুরোধ টেকেনি।

শাকিব শোবিজ ক্যারিয়ারে ধূমকেতুর গতিতে এগিয়ে গেলেও পেছনে পড়ে যান রাত্রি। রাত্রি পিতৃপরিচয়হীন ছেলেকে নিয়ে শুরু করেন জীবন সংগ্রামের নতুন লড়াই।

সমাজের নিষ্ঠুরতার কষাঘাতে পাথর হওয়া রাত্রি ফেকাশে মুখে বলেন, ‌ আমার কারো কাছে কোনো অভিযোগ নেই। একটা পার্লারে কাজ করি। ছেলেটা একটা মোটর ওয়ার্কশপে কাজ শেখে। কারো টাকা পয়সার প্রতি আমার কোনো লোভ নেই। কখনো ছিলোও না।

সুত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ ১১-১২-২০১৭

অপু বিশ্বাস এবং বুবলি কি রাহুল খানকে চেনে? জানে সে কার সন্তান?

এই বয়সের ছেলেরা যেমন হওয়ার কথা, মোটেও তেমন নয় সে। বেশ লাজুক একটা ছেলে। নাম তার রাহুল। পুরো নাম- রাহুল খান। বাংলামোটরে একটি ওয়ার্কশপে মাত্র ৩ হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ করে।

কাজের বাইরে তেমন একটা কথা বলে না। একা একা থাকতে পছন্দ করে। পরিবারের প্রসঙ্গ আসলেই চুপসে যায়।

বিশেষ করে বাবার প্রসঙ্গে কিছুই বলতে চায় না সে। কিসের যেন একটা শূন্যতা খেলা করে তার দু’চোখ জুড়ে। কিন্তু মুখে কোনো কথা নেই।

রাহুল খানের মা রাত্রি। এফডিসিতে সবাই তাকে এক নামে চেনে। তার মায়ের ক্যারিয়ারের শুরু হয়েছিল এই সময়ের হার্টথ্রুব হিরো শাকিব খানের সাথেই। অনেকেই হয়তো জানেন না শাকিব খানের আসল নাম মাসুদ রানা।

সেই মাসুদ রানার কাছের বন্ধু ছিলেন রাত্রি। একসময় শাকিবকে নাচ, গান, এমনকি তাকে তার বাসায় থাকার জায়গা পর্যন্ত করে দিয়েছিলেন রাত্রি। সৌন্দর্য্য আর নাচের পারদর্শীতার কারনে রাত্রির একটা গ্রহণযোগ্যতাও তৈরি হয়েছিল। এমন কি শাকিব খানকে নিয়ে অনেকের কাছে পরিচয় করে দিতেন তিনি।

রাত্রির ভাষ্যমতে, হীরা-চুনি-পান্না সিনেমার জন্য শাকিবকে কিনে দিয়েছিল ১৫ হাজার টাকা দামের একটি দামি স্যুট। শাকিব এখন বড় সুপারস্টার হয়ে গেছে বলেই হয়তো রাত্রিকে তার মনে পড়ে না।

কিন্তু আজও শাকিবের কোন শ্যুটিং এফডিসিতে থাকলে রাত্রি ঠিক থাকতে পারেন না। শাকিবকে দেখার জন্য আজও খাওয়া দাওয়া ভুলে এফডিসির চারপাশ পাগলের মত ঘুরতে থাকেন। কিন্তু সে খবর কে রাখে!

কিন্তু এই তথ্যের ভিত্তি কি? রাত্রির কথা ছাড়া কোনো জোর প্রমাণ না মিললেও এফডিসি সংশ্লিষ্ট অনেকেই শাকিব-রাত্রির ব্যাপারটা জানেন।

প্রোডাকশন বয় থেকে শুরু করে অনেক সাংবাদিকের কাছেও এটা ওপেন সিক্রেট। নিকট অতীত না হওয়ার কারনেই হয়তো কেউ আর এটার চর্চা করেন না। কারো সঙ্গে আলাপ করতে গেলেই কেউ রহস্যজনক হাসি হাসেন অথবা হেসেই উড়িয়ে দেন।

তবে অনেক সূত্রই নিশ্চিত করছে শাকিবের জন্য অনেক কিছুই করেছেন রাত্রি। এক সময়ে রাত্রির বাবা ৪র্থ শ্রেণীর সরকারি চাকুরী করতেন। আর মা ছিল গৃহিনী। পরিবার নিয়ে থাকতেন তেজগাঁও এলাকায়।

ছোটবেলা থেকেই দেখতে বেশ সুন্দরী ছিলেন রাত্রি। আর সেই সূত্র ধরে হয়তো তার চলচ্চিত্রে আর্বিভাব। প্রথম থেকেই রাত্রির চলচ্চিত্রের প্রতি টান আর ভালবাসার কারনেই এখনো জড়িত চলচ্চিত্র পাড়ায়।

রাত্রির ভাষ্যমতে শাকিবই ছিল তার প্রথম জীবনে চলার পথে একমাত্র সঙ্গী। যেখানেই যেত ঠিক সেখানেই সঙ্গে করে নিয়ে যেত শাকিবকে। আর পরিচয় করিয়ে দিতেন বড় বড় পরিচালকদের সাথে। রাত্রি আর শাকিবের মধ্যকার বন্ধুত্ব আস্তে আস্তে গাঢ় হয়ে ওঠে।

দুজনেই তখন প্রাপ্ত বয়স্ক। ফলে ছেলে-আর মেয়ের বন্ধুত্বটা বাঁধন হারিয়ে ফেলে। একসময় সেটা প্রেমে রূপ নেয়, সেই সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েন তারা। সব ঠিকঠাক চলছিল। এর মধ্যেই গর্ভবতী হয়ে পড়েন রাত্রি।

বিষয়টি শাকিবের কান পর্যন্ত গড়ালো, তখন তাদের মধ্যকার সম্পর্কের ভিতটাই নড়ে ওঠলো। শাকিব তখন চলচ্চিত্রের শীর্ষ তারা হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। এখনই পারিবারিক সম্পর্ক বা স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে ক্যারিয়ারের সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করতে চান না। কারন ততদিনে একটু একটু করে সফল হতে শুরু করেছেন শাকিব।

আয় রোজগারও মন্দ হচ্ছিল না। সে কারনে শাকিব কোনোভাবেই ঝুঁকি নিতে চাইলো না। এর মধ্যেই রাত্রির বাচ্চা নষ্ট করার জন্য লাখ টাকা খরচও করতে চেয়েছিলেন শাকিব। কিন্তু মা বলে কথা।

নিজের অমূল্য সম্পদ সন্তানের কথা চিন্তা করে শাকিবের প্রস্তাব এড়িয়ে গেলেন রাত্রি। তখন থেকেই রাত্রির নতুন জীবন শুরু। যে জীবন যুদ্ধের, যে জীবন সংগ্রামের। অনেক চাপ, নির্যাতন সহ্য করেও রাত্রি ঠিকই তার সন্তানকে আলোর মুখ দেখিয়েছেন।

যদিও জানা গেছে রাত্রির সন্তান পৃথিবীতে আসার পর শাকিব তাদের সংসার খরচ হিসেবে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করে আসছেন। মূলত সে কারনেই এই বিষয়টি কখনো মিডিয়ার সামনে ওভাবে আসেনি।

অন্যদিকে চলচ্চিত্র পাড়ায় চিত্রনায়ক মান্না মারা যাওয়ার পর, শাকিব নিজের অবস্থান আরোও গুছিয়ে নেন। ততদিনে জুটি হিসেবেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছেন শাকিব-অপু। গোপনে প্রেম-বিয়ে এমনকি তিনবার অপুরও বাচ্চাও নষ্ট করে ফেলেন তিনি।

ততদিনে রাত্রির জীবনের প্রথম অধ্যায় শেষ হয়ে যায়। তবুও রাত্রি নিজের পরাজয় না মেনে নিয়ে, নিজের সাথে যুদ্ধ করে এফডিসিতে চতুর্থশ্রেণীর আর্টিস্ট হয়ে জীবন-যাপন করতে থাকে।

এ প্রসঙ্গে রাত্রি জানান, আমি শাকিবকে অনেক ভালবাসতাম আর এখনও ভালোবাসি। আমি কোনদিন চাইনা আমার জন্য শাকিবের কোন ক্ষতি হোক। তাই এই বিষয় নিয়ে আর কোন কথা বলতে চাই না।

তবে একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই শাকিবই রাহুলের বাবা। রাহুল এখন অনেক বড় হয়ে গেছে। তবে সে শাকিবের কোন কথাই সহ্য করতে পারে না। এসব নিয়ে সে কথা বলতেও রাজি না।

রাহুলও জানে শাকিবই তার বাবা। রাহুলের কথা বলা, খাওয়া-দাওয়া এমনকি চুলের স্টাইল পর্যন্ত শাকিবের মত। শাকিব হয়তো অনেক বড় সুপারস্টার হয়ে আমাদের ভুলে গেছে।

একদিন সে ঠিকই বুঝবে আমি শাকিবের জন্য কত না কি করেছি? পৃথিবীর এরকমই নিয়ম যে যা করবে, তার ফল সে তাই পাবে। আমি সারা জীবন তাকে দূর থেকেই ভালবেসে যাব।

এসব বিষয় নিয়ে শিশু রাহুলকে কোনো প্রশ্ন করে বিব্রত করা হয়নি। তবে তার বন্ধুরা বলেছে রাহুল প্রায়ই বলে ‘বড় হয়ে আমি যদি কখনও তারে পাই, জোরে একটা থাপ্পর বসিয়ে দেবো তার গালে।’

ঘটনার বিষয়ে শাকিব খানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তিনি এখন হায়াদরাবাদে নোলক ছবির শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এদিকে অপুর সঙ্গে বিয়ে, শাকিব-অপুর সন্তান সর্বশেষ ডিভোর্স বিতর্কের পর রাত্রির বিষয়টি নতুন করে সামনে এলো। এখন সত্য আমাদের কোন দিকে নিয়ে যায় দেখার বিষয় সেটাই।