অজু শেষ করে কলেমা শাহাদাৎ পড়ার- নামাজের আগে অজু করা ফরজ। অজু ছাড়া নামাজ হবে না। মুসলমানের ১৩০ ফরজের মধ্যে শুধু অজুর মধ্যে চার ফরজ রয়েছে।
অজু শেষে কলেমা শাহাদাৎ পাঠ করলে আমলনামায় বাড়তি সওয়াব যোগ হয়। অজু শেষে কলেমা শাহাদাৎ পাঠ করা মুস্তাহাব। কলেমা শাহাদাতের মধ্যে সত্যের সাক্ষ্য রয়েছে। এ জন্য কলেমা শাহাদাতকে সত্যের সাক্ষ্যের কলেমাও বলা হয়ে থাকে।
কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি বলুন, সত্য এসে গেছে এবং মিথ্যা বি লু প্ত হয়ে গেছে; অবশ্যই মিথ্যাকে বি লু প্ত হতে হবে। ’ (সূরা বনি ইসরাঈল-৮১) মিথ্যা কথা বা বিবৃতি মানুষকে ধ্বং স করে।
যে বা যারা অতীতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে কিংবা মিথ্যা কথা বা কাজকে প্রশ্রয় দিয়েছে; উভয় ধ্বং স হয়েছে। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের আগেও বহু উদাহরণ অতীত হয়ে গেছে, সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াও এবং দেখো, মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদের পরিণতি কী হয়েছিল। ’(সূরা আল-ইমরান-১৩৭)
অজু একটি সহজ আমল। ইবাদতের উদ্দেশ্যে অজু করলে আমলনামায় নেকি বৃদ্ধি পায়। অজু শেষে যে কলেমা শাহাদাৎ পাঠ করে, তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়। হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা: থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন,
তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সব নিয়ম-কানুনসহ উত্তমরূপে অজু করবে, এরপর ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু’ পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেয়া হবে। সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে প্রবেশ করতে পারবে। (মুসলিম-তিরমিজি ও মিশকাত, পৃষ্ঠা-৩৯)
অজুর দোয়ার মধ্যেও চারটি সত্যের সাক্ষ্য রয়েছে। সত্যের বিপরীত হলো মিথ্যা। সব পা পে র জননী হলো মিথ্যা। আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোনো শরিক নেই। তিনি সর্বশক্তিমান। তিনি সবার রব। তিনি সবার রিজিকদাতা।
হজরত মুহাম্মদ (সা:) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল। এ সাক্ষ্য যারা দেবেন, আল্লাহ তাদের ওপর সন্তুষ্ট হবেন। তাদের জন্য পরকালে জান্নাতের দরজা খুলে দেবেন। আল্লাহ তায়ালা সবাইকে কলেমা শাহাদাতের ওপর আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
গুনাহ মাফের দোয়া…
কুরআনে পাকে ভাল এবং মন্দ কাজের আলোচনা হয়েছে। এতে বুঝা যায় যে, ভাল এবং মন্দ এ দুটি নিয়েই মানুষের জীবন পরিচালিত। মানুষ ভুল করবে আবার তা থেকে তাওবার মাধ্যমে ক্ষমা লাভ করবে এটা মহান আল্লাহ পাকের ঘোষণা।
মানুষ পা প করবে, আবার অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা ওই বান্দাকে ক্ষমা করে দিবেন। সে ব্যক্তি আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয়বান্দায় পরিণত হবেন। এটাও আল্লাহর ঘোষণা।
কেননা অপরাধী বান্দা যখন আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তখন তিনি অত্যন্ত খুশী হন। এ জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। খাঁটি তওবায় রয়েছে মুক্তি।
প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) গুনাহ থেকে মাফ পেতে তওবার পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি এমন দোয়া শিখিয়েছেন যা আমল করলে গুনাহ থেকে মাফ পাওয়া যায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজের পর তেত্রিশবার সুবহানাল্লাহ, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লাহ, তেত্রিশবার আল্লাহু আকবার পড়ে এবং একশবার পূর্ণ করার জন্য একবার -লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদির -পড়ে তার সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয় যদিও তা সাগরের ফেনাপুঞ্জের সমান হয়। (মুসলিম)।