অশ্লীল নায়িকা ও মা’দ’ক ব্যবসায়ী- এক সময় নিজের অভিনয় দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে বেশ সাড়া ফেলেছিলেন চিত্রনায়িকা একা।
নামি পরিচালক কাজী হায়াতের ‘তেজী’ এবং ‘ধর’সহ বেশ কয়েকটি ছবিতে নায়ক মান্নার বিপরীতে দেখা গিয়েছিল তাকে। সে সময় এ জুটিকে বেশ গ্রহণ করেছিল দর্শক।
এরপর নায়ক মান্নার সঙ্গে একাধারে অনেকগুলো ছবিতে অভিনয় করেন এবং সফলতাও পান তিনি। নায়ক মান্না ছাড়াও রুবেল, আমিন খান, অমিত হাসান, আলেকজান্ডার বো, শাকিব খান, কাজী মারুফসহ আরও অনেক নায়কের বিপরীতেই কাজ করেছেন একা।
অনেকের সঙ্গে জুটি বাঁধলেও নায়ক মান্নার বিপরীতে একা ছিলেন দুর্দান্ত। তার সঙ্গে জুটি বেঁধে বাংলা সিনেমায় সাড়া ফেলেছিলেন তিনি।
কিন্তু নায়ক মান্না মারা যাওয়ার পর তার ক্যারিয়ারে ভাটা পড়ে। নিজেকে মেলে ধরতে পারেন নি এই নায়িকা। নাম লিখান হারিয়ে যাওয়া নায়িকাদের দলে।
পুরনো দশক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে চলচ্চিত্র মাতানো অনেক নায়ক-নায়িকাই হারিয়ে গিয়েছেন। অনেকে ব্যবসায়ে নিমজ্জিত হয়েছেন, অনেকে বিয়ে করে স্বামী ও সংসার নিয়েই সময় পার করে দিচ্ছেন।
সর্বশেষ ২০১২ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘পাগলা হাওয়া’ সিনেমাতে দেখা গিয়েছিল তাকে। এরপর আর দেখা যায় নি তাকে। যদিও এই ছবির মুক্তির অনেক বছর আগেই দেশ ছেড়েছিলেন তিনি।
ফিরেছিলেন ২০১১ সালের দিকে। কিন্তু দেশে ফিরেও আলোতে আসতে পারেন নি কিংবা নিজেকে আগের মত করে মেলে ধরতে পারেন নি আর। নায়ক মান্না মা রা যাওয়া এবং অ শ্লী ল ছবির নায়িকাসহ কিছু বিতর্কিত কাজে জড়ানোর অভিযোগে পড়ে সিনেমা থেকে বিদায় নিয়ে নেন একা।
তবে এখন প্রায়ই বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে দেখা মিলে তার। দেখা গিয়েছে নাটক ও বিজ্ঞাপনেও। তবে অনেকটা সময় কেটে গেলেও নতুন করে সিনেমার পর্দায় এখনও দেখা যায় নি তাকে। একা এক আলাপচারিতায় জানালেন তিনি তার আড়ালে যাওয়া ও ফিরে আসার গল্প।
একা জানিয়েছেন, নিজের বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগের প্রতিবাদও। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার এই চিত্রনায়িকার জন্মদিন ছিল।
এ কারণে থেকেই ভক্ত অনুরাগিসহ সবার শুভেচ্ছায় ভাসছেন তিনি। গত সোমবার দিবাগত রাতে পরিবারের সাথে কেক কেটে আনন্দে মেতে উঠেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মাই টিভির একটি শোতে অংশ নেন।
সিনেমা ছেড়ে আড়ালে চলে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি যে সময়টাতে চলচ্চিত্রে কাজ করেছি তখন অনেক ভালো ভালো ছবিতে কাজ করেছিলাম। সে সময় কিছু প্রযোজক-পরিচালকরা আমাকে দিয়ে তাদের সিনেমায় কাজ করার কথা জানালে গল্প পছন্দ না হওয়ায় আমি তাদের কাজ না করে দিতাম।
সেসব ছবিগুলোতে কাজ করতাম না। তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়ার কারণে তারা আমার উপর জেদ করে আমাকে নানা ভাবে হেয় করার চেষ্টা করেছে। তারা প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে আমি অ শ্লী ল ছবির নায়িকা, মা দ ক ব্যবসায়ী ইত্যাদি ইত্যাদি। যার কোনোটাই আমি নই।
অ শ্লী লতা তখন প্রায় সব ছবিতেই ছিল। কিন্তু যারা মূল নায়ক-নায়িকা ছিলেন তারা কিন্তু সেইসব দৃশ্য করতেন না।
বরং আমরা পরিচালকদের সঙ্গে প্রতিবাদ করেছি, বিদ্রোহ করেছি অ শ্লী লতা নিয়ে। মজার ব্যাপার হলো অ শ্লী ল ছবি করা প্রযোজক ও পরিচালকদের অনেকেই এখনও ইন্ড্রাস্ট্রিতে কাজ করছে।
সেই সময় আমাদের নায়ক হওয়া অনেকেই এখনও অভিনয় করে বেড়াচ্ছেন দাপটের সঙ্গে। অথচ আমার মতো অনেক অভিনেত্রী অকারণে এই অভিযোগ মাথায় নিয়ে ঘুরছি।
সবাই তো ঠিকই কাজ করছে, অ শ্লী ল হয় শুধু নায়িকারাই!’ মান্না ভাইয়ের মত করে আর কারও সঙ্গে আমার জুটি জমে উঠেনি।
যার কারণে মান্না ভাই চলে যাওয়ার পর আমাকে অনেক ভুগতে হয়েছে। চারিদিকে খুব ষ’ড়’য’ন্ত্র চলছিল। শেষে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম একেবারে। নোংরা রাজনীতি আর অ শ্লী লতার ফাঁদে পড়ে আমি অভিযুক্ত হয়ে গিয়েছিলাম।
এমন অ’ভি’যো’গ নিয়ে আমার মত অনেক নায়িকাই সরে গিয়েছেন। সরে না গিয়েও উপায় ছিল না। এছাড়াও আমাদেরকে সবসময় ইচ্ছে করে ব্যাকফুটে রাখার চেষ্টা করা হতো।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে মা দ ক ব্যবসায়ের দায় নিয়ে দেশ ছেড়েছিলাম। কিন্তু যেই অভিযোগটা আনা হয়েছে সেটা একদমই ঠিক না। আমি নোং রা রাজনীতির শি’কা’র হয়েছিলাম। যার কারণে কোনো উপায় না পেয়ে দেশ ছেড়েছিলাম।
সুত্র-বি ডি ২৪ লাইভ।