বিজ্ঞানীদের মতে, ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে আমাদের দেহের অ’ঙ্গভঙ্গি দেখে বোঝা যায় আমরা সত্যি বলছি নাকি মিথ্যা বলছি। কণ্ঠস্বর বা চোখের নড়াচড়ায় ফুটে ওঠে আমাদের মনের গো’পন অভিপ্রায়।
আমরা আল্লান পিজ, লিল্লিআন গ্লাস সহ আরো বেশ কিছু বিখ্যাত সাইকোলজিস্টের কাজ নিয়ে পড়াশোনা করে খুঁজে বের করেছি যে, মিথ্যাবাদী মানুষ সত্য আড়াল করতে ১২টি অ’ঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করে। আসুন দেখে নিই কি কি অ’ঙ্গভঙ্গি দেখে একজন মিথ্যাবাদী মানুষকে চি’হ্নিত করা যায়।
১২. তারা ঠোঁট কা’মড়ায় এবং চাটে মিথ্যা বলার সময় মানুষের মুখ শুকিয়ে যায়। কারণ যখন কেউ মা’নসিক চা’পে থাকে তখন অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেম লালা উৎপাদন কমিয়ে দেয়। যদি তাদের পানি খেতে দেওয়া হয় তাহলে তারা ঢক ঢাক করে পানি খাবে। আর সাধারণত তারা ঠোঁট ভেজানোর জন্য ঠোঁট কা’মড়ায় এবং চাটে।
১১. তাদের কাঁধ পিছনে এবং থুতনি উপরে ওঠানো থাকে যদি কেউ তার কাঁধ পিছনে নিয়ে কথা বলে তাহলে বুঝতে হবে সে যা বলছে তা বলে সে নি’রাপদ বোধ করছে না। একই ভাবে তারা থুতনিও উঁচু করে স্বা’ভাবিকের চেয়ে জো’রে কথা বলে।
১০. চোখ বড় বড় করে কথা বলে সাইকোলজিস্টরা বলেন, মিথ্যা কথা বলার সময় মানুষ বেশিক্ষণ চোখ স্বা’ভাবিক রাখতে পারে না। তাই যখন কেউ মিথ্যা কথা বলে আপনাকে বোঝানোর চেষ্টা করে তখন তারা চোখ বড় করে আপনার বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করতে থাকেন। এসময় খেয়াল করবেন তাদের দ্রুত চোখ নাড়াচাড়া করে।
৯. তারা নড়াচড়া কমিয়ে দেয় মিথ্যাবাদীরা কথা বলার সময় বেশ নড়াচড়া করে-এই চিহ্নটি অনেক মিথ্যাবাদীই জানেন। তাই তারা নড়াচড়া কমিয়ে দেয় এবং যতটা সম্ভব একই জায়গায় সটান হয়ে দাঁড়িয়ে বা বসে কথা বলতে চেষ্টা করে।
৮. তারা আপনার দিকে আঙুল তুলবে কারো দিকে আঙুল তোলা হলো আ’ক্রমণাত্মক ভঙ্গি। যদি কেউ আপনার দিকে আঙুল তুলে আপনাকে উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দেয় তার মানে সে আপনাকেও উ’ত্তেজিত করার চেষ্টা করছে। এভাবে আঙুল তুলে কথা বলার মানে হলো সে নিজেকে বাঁ’চানোর এবং আপনাকে ভুল প্রমাণের চেষ্টা করছে।
৭. তারা মাথা উঁচু করে কথা বলে চার্লস ডারউইন দেখেছেন মানুষ যেসব বিষয়ে বিশেষ আগ্রহী সেসব জিনিস দে’খতে মাথা উঁচু করে দেখে। মিথ্যাবাদীরাও তাই কথা বলে প্রতিউত্তরের জন্য মাথা উঁচু করে রাখে। কারণ এতে তার কথায় আত্মবিশ্বা’স ফুটে ওঠে এবং আপনাকেও তার কথায় বিশ্বা’স স্থাপনে বাধ্য করে।
৬. তারা জামার কলার টেনে তোলে এবং ঘাড়ে বা মাথায় হাত দেয় ঘাড় এবং মাথা মানব দে’হের অন্যতম স্প’র্শকাতর অ’ঙ্গ। আমরা যখন বি’পদ আঁচ করতে পারি তখন ঘাড়ে বাতাস লাগানোর জন্য ঘাড় থেকে কলার সরিয়ে দিয়ে থাকি।
এতে বোঝা যায় ব্য’ক্তিটি অ’স্বস্তিতে ভু’গছেন এবং দ্রুত অবস্থার উন্নতি কামনা করছেন। মিথ্যা বলার সময় ঘাড়ে বা মাথায় হাত দেওয়াও আরেকটি গু’রুত্ব পূর্ণ লক্ষণ। এর মানে সে যা বলছে তা সত্য নাও হতে পারে।
৫. তারা দেহের স্প’র্শকাতর অ’ঙ্গ ঢাকার চেষ্টা করে মানুষ যখন ভীত থাকে বুক, পে’ট এবং কুঁচকি- এই তিনটি স্থান ঢাকার চেষ্টা করে। এর সাইকোলজিক্যাল ব্যাখ্যা হলো: অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেম এসব অ’ঙ্গের সাথে সংশ্লি’ষ্ট পেশিতে সংকেত পাঠায় এবং সেখানে অস্ব’স্তি সৃষ্টি করে।
৪. তারা কোনো জিনিস ধরে কথা বলার চেষ্টা করে যখন কেউ মিথ্যা বলে তখন সে নিজেকে স্থির রাখতে চেষ্টা করে এবং সে দেয়াল, চেয়ার, টেবিল এবং নি’রাপদ বোধ করে এমন কিছু জিনিস ধরে কথা বলে, যেন তাকে দে’খতে স্বা’ভাবিক মনে হয়।
৩. নিজেদের পরিপাটি রাখার চেষ্টা করে এই আচরণটি মেয়েদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, যখন তাদের অস্ব’স্তি কর প্রশ্নের সম্মু’খীন হতে হয়। তারা চুল ঠিক করার চেষ্টা করেন এবং ঘাম না থাকলেও টিস্যু বা আঁচল দিয়ে মুখ লুকিয়ে মনোযোগ বি’ঘ্ন িত করার চেষ্টা করে। এতে তারা নি’রাপদ এবং অনেক বেশি আত্মবিশ্বা’সী অ’নুভব করেন যখন তারা মিথ্যার আশ্রয় নেয়।
২. তারা আপনার থেকে সামান্য দূরে দূরে থাকে যখন কেউ কারো সাথে কথা বলে তখন সে চাইলেই মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে তাকাতে পারে, কিন্তু শরীর এড়াতে পারে না। কিন্তু যদি পুরো শ’রীর সহ কেউ আপনার থেকে ঘুরে যায় বা নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করে তাহলে ধরে নিতে হবে সে আপনার সাথে এই বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী না অথবা সে যা বলেছে তা ছিলো মিথ্যা।
১. হাত মেলানোর সময় আঙুল ক্রস করে হাত মেলানোর সময় যদি কেউ আঙুল ক্রস করে তার মানে হলো সে আপনার সাথে সৎ থাকবে না। সেনাবাহিনী তে এই ধ’রণে ক্রস ফিঙার হ্যান্ডশেকের প্রচলন আছে, যখন কাউকে এমন কারো সাথে হাত মেলাতে বলা হয় যা তিনি চান না। হাত পিছনে নিয়ে আঙুল ক্র’স করতেও দেখা যায় অনেককে। এর মানে হলো সে আপনাকে পাত্তা দিচ্ছে না। তাই আপনার সাথে সে যা বলবে তা মিথ্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
বোনাস ফোনে কথা বলার সময় আপনি মিথ্যাবাদীকে দেখতে পাবেন না কিন্তু তার মিথ্যা কথা ধ’রার উপায় কি? হ্যাঁ, সে ফোনে কথা বলার সময় পুরো শব্দ বা বাক্য শেষ করবে না এবং অবচেতন মনেই ফেঁসফেঁ’সে ও নিচু শব্দে কথা বলবে। এর কারণ হলো মিথ্যা বলার সময় শরীরে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যায় এবং কথা বলার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পাওয়া যায় না। ফলে কথা পুরো শেষ করার আগেই তাকে নিঃশ্বাস নিতে হয়।