প্রতারকের সঙ্গে নিজেকে উজাড় করে দেয়া ডাক্তার নারীর তিন রাত

3630

সুইমিং পুল। সাঁতার কাটছেন দু’জন। স্বল্পবসনা ত’রুণী। স্লিম, লম্বা, শ্যাম বর্ণের মে’য়েটির আনন্দের শেষ নেই। প্রে’মিকের সঙ্গে বেড়াতে এসেছেন। ঢাকা থেকে সিলেটে।

শাহজালাল উপ-শহর এলাকার একটি তারকা হোটেলে ওঠেছেন দু’জন। প্রে’মিক ছে’লেটির নাম জুয়েল মাহবুব।

দেখতে লম্বা না হলেও বেশ সুদর্শন। অনেকটা বোম্বের হিরোদের মতো। ত’রুণী মে’য়েটির নাম তাহমিনা তাবাসসুম। একটি প্রাইভেট মেডিকেলের ডাক্তার।

জুয়েল বারবার পুল থেকে ওঠে ছবি, ভিডিও ধারণ করছে। কখনও সেলফি। ক্যামেরা তাক করে বু’কের স’ঙ্গে জ’ড়িয়ে ধরছে ডাক্তার তাহমিনাকে। ভেজা কা’পড়ে তখন চ’রম আ’বেদনময়ী তিনি।

এখানেই শেষ না। চা বাগানে, ইকোপার্কেও ধারণ করা হয়েছে অসংখ্য ছবি। তাহমিনা অবাক হয়ে প্রশ্ন করেছেন কয়েকবার, তুমি এতো ছবি, ভিডিও পাগল কেন? জুয়েলের সহজ উত্তর, তোমার স’ঙ্গে ছবি, ভিডিও তুলতে ভালো লাগে। যখন পাশে থাকবে না তখন এগুলো দেখবো।

ওই হোটেলে থাকাকালে যে ভিডিও ধারণ করা হয় তা প”র্নোমু’ভির চেয়েও কম না। শেষ পর্যন্ত ওই ডাক্তার মে’য়েটির অ’ভিযো’গের প্রেক্ষিতে মিরপুর থেকে গ্রে’প্তার করা হয় জুয়েল মাহবুবকে।

উ’দ্ধার করা হয় হাজার হাজার ছবি ও কয়েকটি ভি’ডিও ক্লি’প। পু’লিশের জি’জ্ঞাসাবাদে পুরো বর্ণনা দিয়েছে জুয়েল।

প্রথম দেখাতেই সিলেটে বেড়াতে গিয়েছিলেন জুয়েল-তাহমিনা। তিন রাত ছিলেন ওই তারকা হোটেলে। সেখানেই প”র্নো স্টা’ইলে বিভিন্ন ভিডিও ধারণ করা হয়। ভিডিওগুলোর বেশিরভাগই গো’পন ক্যামেরায় ধারণকৃ’ত।

অবশ্য দু’জনের দেখা হওয়ার আগেই প”র্নো বি’ষয়ে জুয়েল বেশ শিখিয়েছে তাহমিনাকে। ভার্চুয়াল শিক্ষা। চ্’যাট করতো রাতভর। কথা হতো অডিও, ভিডিও কলে। তারপর দুপুর পর্যন্ত ঘুম। হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারে প”র্নোভিডিও পাঠাতো জুয়েল।

পাঠাতো এ ধরণের ছবি। শুরুতে তাহমিনা ব’কা দিতেন খুব। তবুও থামতো না জুয়েল। যদিও কৌ’তূহল ছিলো তাহমিনারও। এভাবেই প্রশিক্ষিত হয়ে ওঠেন এই ডাক্তার।

দেখা না হলেও ততদিনে তাদের সম্পর্ক বেশ গ’ভীর। কথায় কথায় উ’ত্তেজনা সৃষ্টি করতো জুয়েল। পরিচয়টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বেশ কয়েক বছর আগে।

ফেসবুকের ছবি দেখইে একে-অন্যকে পছন্দ করেন। ঢাকার ইন্দিরা রোডের এক ধনাঢ্য প’রিবারের স’ন্তান জুয়েল। ব্য’বসায়িক সুবিধার কারণে প’রিবারের সঙ্গে থাকেন উত্তরা।

সেখানে গাড়ির ব্যবসা রয়েছে তার। প্রায়ই ছুটে যান বিভিন্ন দেশে। এই ব্যস্ততার মধ্যেই যতœ করে সময় দেন তাহমিনাকে। এমনটিই জানতেন ডাক্তার তাহমিনা।

তাহমিনা তখন ধানমন্ডি এলাকার একটি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব। তারপর প্রেম। চুটিয়ে প্রেম বা লং ড্রাইভ.. সবকিছুতেই দু’জনের প্রচন্ড আগ্রহ। কিন্তু শর্ত দিয়ে দেন জুয়েল। প্রথম দেখাতেই স্বা’মী-স্ত্’রীর মতো সময় কা’টাবেন। একদম হানিমুন বলা যায়। সেটা ঢাকার বাইরে কোথাও। তারপরও অন্যকিছু।

আমতা আমতা করছিলেন তাহমিনা। এটা কিভাবে সম্ভব। চতুর জুয়েল বুঝিয়ে সম্মতি আদায় করেন। ঘটনাটি ২০১৯ সালের শুরুর দিকে। কথানুসারেই দেখা হয় এক সকালে। দু’জনের সঙ্গে দুটি ব্যাগ।

রেস্টুরেন্টে সকালের নাস্তা সেরে সোজা বিমানবন্দর। তারপর পৌঁছে যান সিলেটে। সেখানে হোটেল কক্ষে যাওয়ার পর ফ্রেশ হওয়ার আগেই শুরু হয় জুয়েলের ভালোবাসার অ”ত্যা’চার। অবশ্য তার আগেই মা’থায় হা’ত রেখে জুয়েলের প্রতিশ্রুতি নেন তাহমিনা।

শিগরিই বিয়ে করবেন তারা। কখনও একে-অন্যকে ছে’ড়ে যাবেন না ইত্যাদি। তাহমিনা যেনো স্বপ্নের রাজ্যে। উদার মনে নিজেকে উজাড় করে দেন। এভাবে একে একে তিন রাত। ফিরে যাবেন তারা। এরমধ্যেই ঘটে ঘটনাটি।

জুয়েল তখন ওয়াশ রুমে। সময় কম। দ্রুত বিমানবন্দর যেতে হবে। আজই ফিরতে হবে ঢাকায়। জুয়েলের ফোনটি বাজছিলো বেশ কয়েকবার। এর আগেও এরকম অনেকবার কল এসেছে কিন্তু তাহমিনা রিসিভ করেননি।

এবার আনমনেই কলটি রিসিভ করেন। ওই প্রান্ত থেকে ভেসে আসছে একটি নারী কণ্ঠ। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি জুয়েলের স্ত্রী বলছি। আপনি কে?

ডাক্তার তাহমিনা হ’তভম্ব। যেনো মা’থার ও’পর আকাশটা ভে’ঙ্গে পড়ছে। আর সহ্য করা সম্ভব হ’য়নি। লাইন কে’টে দেন চি’কিৎসক ত’রুণী। যদিও তখন বিশ্বাস-অ’বিশ্বাসের মধ্যেই ছিলেন তিনি। মনে হচ্ছিলো কেউ হয়তো মজা করছে। জুয়েলের কোন বা’ন্ধবী হতে পারে।

তবুও বি”মর্ষ চেহারা, দ’গ্ধ মন নিয়ে ঢাকায় ফেরেন। পথে, বিমানে বারবার জুয়েল জানতে চেয়েছে কি হলো? নিশ্চুপ তাহমিনা। বিমানে ওঠার আগে জুয়েলের ফোনটি বারবার বাজছিলো কিন্তু রিসিভ করেনি। এতে তাহমিনা নিশ্চিত হয়ে যান তিনি এক প্র’তারকের খ’প্পড়ে প’ড়েছেন।

বি’ষয়টি আরও যাচাই করতে ঢাকায় ফিরে জুয়েলের এক ব’ন্ধুকে মেসেঞ্জারে কল দেন। যার সঙ্গে এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই পরিচয়। স’ন্দেহের সত্যতা পান ত’রুণী। তার প্রে’মিক বি’বাহিত এবং দুই স’ন্তানের জ’নক। মি’থ্যা পরিচয়েই প্রে’মের স’ম্পর্ক গড়ে ওঠেছিলো তাদের।

চি’কিৎসক ত’রুণী বেশ কয়েকদিন ফোন ব’ন্ধ করে বাসায় ব’ন্দি জী’বন কা’টান। ফোনটি খোলার পর প্রে’মিকের কল। তিনি সম্পর্ক রাখতে চান। বিয়ের দরকার নেই। ত’রুণী জানিয়ে দেন, কোনোভাবেই তার স’ঙ্গে স’ম্পর্ক রাখা স’ম্ভব না।

তারপর থেকেই হু”মকি-ধ’মকি দিতে থাকে ছে’লেটি। ফোনে, মেসেঞ্জারে একই হু’মকি। স’ম্পর্ক না রাখলে অ’ন্তর’ঙ্গ মু’হূর্তের ছবি, ভিডিওগুলো ফেসবুকে, ইউটিউবে ছ’ড়িয়ে দেয়া হবে। ফোন, ফেসবুক বন্’ধ রাখেন।

ডাক্তার তাহমিনা ঢাকা ছেড়ে চট্টগ্রামে চলে যান। সেখানেও শা’ন্তি নেই। স্ব’স্তি নেই। ঠিকানা সংগ্রহ করে হাজির হয় জুয়েল। যে কোনোভাবে এই ত’রুণীকে তার চাই।

শেষ পর্যন্ত সি’টিটিসি’র সা’ইবার ক্রা’ইম ইউনিটের স’হযোগিতা নেন এই ত’রুণী। তথ্য প্র’যুক্তির মাধ্যমে ওই ত’রুণের অবস্থান শ’নাক্ত করে গ্রে’প্তার করা হয় তাকে। জ’ব্দ করা হয় ছবি, ভিডিও।

ত’দন্ত সং’শ্লিষ্টরা জানান, এই প্র’তারক এরকম বেশ কয়েক ত’রুণীর স’ঙ্গে প্র’তারণা করেছে। মি’থ্যা প’রিচয় দিয়ে সম্’পর্কে জ’ড়িয়ে জি’ম্মি করে ভো’গ করতো। কারও কারও কাছ থেকে বিপুল অর্থ আ’দায় করতো।

সি’টিটিসি’র সা’ইবার ক্রা’ইম ইউনিটের উপ-পু’লিশ ক’মিশনার নাজমুল ইসলাম বলেন, এরকম অনেক ঘটনা রয়েছে। আ’সামিকে গ্রে’প্তার ও ভি’কটিমকে সুরক্ষা দিয়ে ত’দন্ত করেছি। আমরা মা’মলা ছাড়াও অনেককে স’হযোগিতা করি। অ’ভিযোগকা’রীদের মধ্যে মা’মলা করতে চান খু’বই কম। তাদের হার ৩০ ভাগের বেশি না বলে জানান তিনি। সূত্রঃ মানবজমিন